মিরপুর, কুষ্টিয়া, করেসপন্ডেন্ট।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ মাজিহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘অভিভাবক সমাবেশ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা-২০২৫’। ৪ আগস্ট সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রধান শিক্ষক মো. একরামুল হক, সহকারী প্রধান শিক্ষক মামুনার রশিদ, সহকারী শিক্ষক মনিরুল ইসলাম, আশরাফুল আলম সহকারী শিক্ষক ওইদুল হক সহকারী শিক্ষক ছেলিনুর রহমান এছাড়াও বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও নাজমুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও মানসিক বিকাশের জন্য শুধু পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানই যথেষ্ট নয়। এ ধরনের অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করে, পাশাপাশি শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেমের বীজ বপন করে। তিনি আরও বলেন, “বিদ্যালয় শুধু বিদ্যা অর্জনের স্থান নয়, এটি একটি মূল্যবোধ তৈরির কারখানা, যেখানে শিক্ষক ও অভিভাবক একসঙ্গে কাজ করলে শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়।
প্রধান শিক্ষক মো. একরামুল হক তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আজকের কৃতি শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের নেতৃত্বে আসবে। তাদের এই সফলতা বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের সম্মিলিত পরিশ্রমের ফল।” তিনি অভিভাবকদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আপনারা বিদ্যালয়ের পাশে থেকে যেভাবে সহযোগিতা করছেন, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।”
অনুষ্ঠানে জেএসসি, এসএসসি এবং বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও শ্রেষ্ঠ ফলাফলধারী শিক্ষার্থীদের হাতে সংবর্ধনা ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায় এই সম্মাননা পেয়ে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করে, যা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে তোলে।
অনুষ্ঠানে অভিভাবক প্রতিনিধিরা বলেন, এই ধরনের আয়োজনে আমরা সন্তানদের অগ্রগতির তথ্য জানতে পারি এবং বিদ্যালয়ের কার্যক্রমের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হতে পারি। এতে শিক্ষক-অভিভাবক সম্পর্ক দৃঢ় হয় এবং শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন নিশ্চিত হয়।
স্থানীয় সমাজসেবক বলেন, “আজকের এই আয়োজন প্রমাণ করে, মাজিহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় শুধু শিক্ষায় নয়, সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষার দিক থেকেও অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। এর ফলে আগামী প্রজন্ম সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।
সার্বিক আয়োজনে সহযোগিতা করেন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষার্থীদের একটি স্বেচ্ছাসেবক দল। অনুষ্ঠান শেষে সবাই বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
মাজিহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ভবিষ্যতে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্ট মহল।