ডনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি-ধামকি, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান আধিপত্যের মধ্যেই তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ওমানে আলোচনায় বসছেন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
শনিবার দুই পক্ষের মধ্যে এই আলোচনা একদিকে যেমন আশার সঞ্চার করছে, তেমনি আলোচনায় কোনো ফল না এলে অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা মারাত্মক আকার ধারণ করবে এমন আশঙ্কাও আছে।
কোনো চুক্তি না হলে ইরানে বোমা মারার হুমকি আগেই দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এর পাল্টায় ইরান সতর্কতার সঙ্গে অগ্রসর হচ্ছে, তবে তারা ট্রাম্পের পদক্ষেপকে সন্দেহের চোখে দেখছে; এমনকি আলোচনা আদৌ কোনো চুক্তিতে গড়াবে কিনা তা নিয়েও তারা সন্দিহান।
দুই পক্ষই আলোচনায় অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বললেও তাদের মধ্যে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলে বৈরিতার কারণে সৃষ্ট দূরত্ব এখন এতটাই যে এখন পর্যন্ত আলোচনাটি ট্রাম্পের চাওয়া অনুযায়ী মুখোমুখি হবে না ইরানের চাওয়া অনুযায়ী অপ্রত্যক্ষ আলোচনা হবে তাও এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে আলোচনায় সামান্য অগ্রগতিও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান উত্তেজনার পারদ কিছুটা হলেও কমিয়ে আনবে বলেই মত বিশ্লেষকদের।
গত দুই বছরে ওই অঞ্চলে গাজা ও লেবাননে যুদ্ধ হয়েছে; ইরান ও ইসরায়েল একে অপরের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের সরকার উৎখাত হয়েছে, এদিকে লোহিত সাগরে মার্কিন রণতরী লক্ষ্য করে হুতিরা একের পর এক হামলা চালাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনা পুরোপুরি ভেস্তে গেলে বিশ্বের সিংহভাগ তেল রপ্তানিকারক অঞ্চলটিতে সংঘাত চরম আকার ধারণ করতে পারে।
কাছাকাছি যেসব দেশে মার্কিন ঘাঁটি আছে, সে দেশগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে তেহরান বলেছে, ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো হামলায় এ দেশগুলো যদি অংশীদার হয়, তবে তাদেরকে ‘গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।
তবে এর মধ্যেও ইরান আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিকে আলোচনার ব্যাপারে ‘পূর্ণ কর্তৃত্ব’ দিয়েছেন বলে ইরানি এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
ওমানে আলোচনায় আরাগচি ইরানি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন, যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে আলোচনা তদারকির দায়িত্বে আছেন ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ।
“আলোচনা কেবল পারমাণবিক ইস্যু নিয়েই হবে, তবে তা কতক্ষণ চলবে তা নির্ভর করবে মার্কিন প্রতিনিধিদের সদিচ্ছা এবং কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, তার ওপর,” বলেছেন ওই কর্মকর্তা।
ইরান জানিয়েছে, কোনো আলোচনাতেই তারা ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিসহ তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বিষয়ে ছাড় দেবে না।