
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে এসএসসি পরীক্ষার সময় খাতা না দেখানোকে কেন্দ্র করে সহপাঠীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছে ইমন হোসেন (১৭) নামের এক পরীক্ষার্থী। শুক্রবার সকালে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ইমন সিরাজগঞ্জের খুকনী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী এবং ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা এমদাদুল হকের ছেলে।
পরিবারের বরাত দিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার সময় রাব্বি ও রাজিমসহ কয়েকজন সহপাঠী ইমনের কাছে খাতা দেখতে চায়। ইমন তাদের খাতা না দেখালে পরীক্ষা শেষে তাকে মারধর করা হয়।
পরদিন শুক্রবার বিকেলে অভিযুক্ত রাব্বি ও রাজিম ইমনকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় এবং আবারও মারধর করে। এক পর্যায়ে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে গুরুতর আহত করে। এরপর ইমনের পরিবারকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, “এক্সিডেন্ট হয়েছে”। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাথার ভাঙা খুলি জোড়া দেওয়া হয়।
হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি নেওয়ার পর অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে শুক্রবার সকালে চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বড় ভাই আরাফাত এবং চাচা শহিদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে তারা এনায়েতপুর ও বেলকুচি থানায় অভিযোগ করতে গেলে সীমানা জটিলতার অজুহাতে কোনো থানাই মামলা গ্রহণ করেনি।
এদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমন একটি চিরকুটে অভিযুক্তদের নাম লিখে রেখে যায়, যেখানে উল্লেখ ছিল—“আমাকে রাব্বি আর রাজিম ডেকে নিয়ে গেছে।”
গ্রাম্য প্রধান মোঃ লাল মিয়া মোল্লা জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তিনি স্থানীয়দের নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে জানতে পারেন, প্রায় ৮-১০ জন মিলে ইমনকে পিটিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন ইয়াজদানী বলেন, “লাশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে।” বিস্তারিত জানতে থানার দ্বিতীয় অফিসার মোঃ আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। তবে আনোয়ারুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বেলকুচি থানার ওসি জাকেরিয়া হোসেন জানান, “ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত সাপেক্ষে দেখা হবে কোথায় মামলা গ্রহণ করা হবে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।”
এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাব্বি ও রাজিম বর্তমানে পলাতক রয়েছে।