
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আলোচিত সশস্ত্র গোষ্ঠী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) বিলুপ্তির মাধ্যমে অবসান হতে যাচ্ছে তুরস্ক-পিকেকে’র চার দশকের সংঘাত।
সোমবার (১২ মে) গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম ফিরাত নিউজ এজেন্সির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গোষ্ঠীটির বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে অবসান ঘটতে যাচ্ছে তুরস্ক-পিকেকের প্রায় চার দশকের সংঘাতের। রোববার স্বেচ্ছায় আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের বিলুপ্তির ঘোষণা দিয়েছে গোষ্ঠীটি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে এক সম্মেলন আয়োজন করে দলটি। এরপর গোষ্ঠীটি জানায়, তারা বেশ কিছু ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা খুব শিগগির সবাইকে জানানো হবে। এ সময় কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালানের এক বিবৃতিও পাঠ করা হয়, যেখানে পিকেকের বর্তমান-ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিজের মতামত ও প্রস্তাব তুলে ধরেন ওজালান।
এক বিবৃতিতে পিকেকে জানায়, তাদের সশস্ত্র লড়াই কুর্দিদের অধিকার আদায়ের লড়াই। যারা কুর্দিদের অধিকার খর্ব করছিল, তাদের বিরুদ্ধে সফল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে পিকেকে। কিন্তু এখন তারা মনে করে, তাদের সেই ঐতিহাসিক দায়িত্ব শেষ হয়েছে। এই কারণে সংগঠনের ১২তম কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পিকেকের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে ফেলা হবে এবং সশস্ত্র লড়াই বন্ধ করা হবে। পিকেকে নামের যে সশস্ত্র কার্যক্রম চলছিল, তা আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত বলে বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলা হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল একে পার্টির একজন মুখপাত্র বলেছেন, যদি এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়, পিকেকের সব শাখা ও অবকাঠামো যদি একেবারে বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়, তাহলে তুরস্কের ভবিষ্যৎ ও রাজনীতির জন্য এটি হবে একটি বড় বাঁকবদল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘোষণার পর তুরস্ক ও পিকেকের দীর্ঘদিনের সংঘাত শেষ হওয়ার পথ তৈরি হয়েছে, যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছিল সিরিয়া ও ইরাকেও। এর আগে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে কারাগার থেকে এক চিঠিতে গোষ্ঠীটিকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানান ওজালান।
১৯৮৪ সালে কুর্দিদের জন্য একটি পৃথক ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই শুরু করে পিকেকে। সেই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। গত কয়েক বছরে তুরস্কে পিকেকের হামলা অনেকটাই কমে এসেছিল। কারণ, তুর্কি সেনাবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পেছাতে পেছাতে পাহাড়ি সীমান্ত পেরিয়ে ইরাকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছিল কুর্দিরা।