
নিজস্ব প্রতিবেদক:
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বুধবার চট্টগ্রাম সফরে আসছেন। এটি তার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম চট্টগ্রাম সফর।
এই সফরের মধ্য দিয়ে তিনি চট্টগ্রাম বন্দর, কালুরঘাট সেতু এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন, পাশাপাশি নিজের জন্মভূমিতে গিয়ে পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে সময় কাটাবেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ড. ইউনূস চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর প্রথমেই চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করবেন। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি)-৫ প্রাঙ্গণে একটি বিশেষ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে।
এই সভায় বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দর ব্যবস্থাপনা, কর্মক্ষমতা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং চলমান প্রকল্পগুলো নিয়ে একটি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা প্রদান করবে। সভায় বন্দর ব্যবহাকারী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়াও বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ও পরামর্শ পেতে আশাবাদী। এই বৈঠকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরসহ অন্যান্য বৃহত্তর প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরবর্তীতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস থেক৷ সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস চট্টগ্রাম শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এটি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার বিশাল জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল।
সেতুটি নির্মিত হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সহজ হবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের অনুরোধে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তরের ফলকে তার নাম উল্লেখ করা হবে না, এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বিকেলে ড. ইউনূস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে যোগ দেবেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত এই সমাবর্তনে প্রায় ২২ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থী সনদ গ্রহণ করবেন। সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ড. ইউনূস।
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে সম্মানসূচক ‘ডি-লিট’ ডিগ্রি প্রদান করবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক হিসেবে ড. ইউনূসের এ সম্মাননা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
ড. ইউনূস ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে যোগদান করেন এবং সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষকতা করেন।
সমাবর্তন শেষে, ড. ইউনূস তার পৈতৃক বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে যাবেন। সেখানে তিনি তার দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করবেন এবং আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করবেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় দেড় যুগ পর ড. ইউনূস নিজের জন্মভূমিতে পা রাখছেন। সর্বশেষ ২০১৯ সালে তিনি চট্টগ্রামে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসেছিলেন, তবে তখন তিনি গ্রামের বাড়ি যাননি।
ড. ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আট ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় সন্তান।