
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সামর্থ্যবান মুসলমানগণ ঈদুল আযাহায় গরু কোরবানী দিয়ে থাকেন। আর কিছুদিন পরেই ঈদ। ঈদে দেশীয় গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রান্তিক কৃষক ও ছোট খামারিরা গরু-ছাগল পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কিছুটা বাড়তি লাভের আশায় ঈদকে সামনে রেখে সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত গরুকে গোসল করা, খাবার দেওয়াসহ পশুর পরিচর্যা নিয়ে এক প্রকার ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা।
এ বছর খুশির খবর হলো ক্ষতিকর ইনজেকশন ও ট্যাবলেট ব্যবহার না করে দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন খামারি ও কৃষকেরা।
এরই ধারাবাহিকতায় সদর উপজেলার সালন্দর তেলীপাড়া, মন্ডলপাড়া, চন্ডিপুর, গড়েয়া মিলনপুর, আখানগর, বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গরুর খামারে গিয়ে দেখা যায়, খামারীরা গরু-ছাগলের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রাণিসম্পাদ কর্মকর্তা সাহিদুর রহমান, জানান ঠাকুরগাঁও সদরে ১৬৩৩ টি খামার রয়েছে।
এর মধ্যে ষার সংখ্যা ১৫ হাজার ৫শ ৫৫ বলদ ৩৭৫৪, গাভি ৬১১২, গরু ২৫৪২১,মহিস ৮, এবং ছাগলের সংখ্যা ১০২১৪, মোট গভাদি পশুর সংখ্যা ৩৫৯৬৩ আর ঈদে আমাদের চাহিদা,৩২৭০০, কিন্তু ঈদে ঘারতি থেকে যায় ৩২৬৩ টি গরু।
সদর উপজেলার সালন্দর মন্ডলপাড়ার গরুর খামারী মো: হাবিবুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে কুরবানী ঈদকে সামনে রেখে গরু লালন-পালন করে বিক্রি করে আসছি। প্রত্যেক বছর কুবানীর কমপক্ষে ৩-৪ মাস আগে বিভিন্ন হাট থেকে গরু সংগ্রহ করি, সেগুলোকে ক্ষতি ব্যতিরেকে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করন করি। এ বছরও আমার খামারে ২০টি গরু প্রস্তুত করছি কুরবানীর জন্য। তবে গো খাদ্যের দাম যে হারে বেড়েছে এতে করে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় গরুর প্রয়োজনীয় দামে বিক্রি করতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে। খামারের বেশিরভাগ গরু প্রায় ১ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারলে কিছুটা মুনাফা হবে।
ভাউলার হাট নাপিত পাড়া গরু খামারি বিষ্ণু বলেন, আমি প্রত্যেক বছর কুরবানীর ৪ মাস আগে ৫০-৬০ হাজার টাকা মূল্যমানের গরু সংগ্রহ করি। এ বছরও ৩৫ টির মত গরু প্রস্তুত করছি। ঈদের আগে সেগুলোকে মোটা তাজাকরণের পর কুরবানীর হাটে উঠাবো। তবে ভয় থাকে দেশের বাহিরে থেকে গরু আনা হলে আমাদের মত খামারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
অন্যদিকে পৌর শহরের হাজীপাড়া মহল্লার মিলন ইসলাম বলেন, গরুর দাম যে হারে বেড়েছে, এ বছর কুরবানী দেওয়া দুস্কর হয়ে পরবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৮০০ থেকে ৯০০শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে অনুযায়ী ছোট আকারের একটি কুরবানীর গরু কিনতে প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। এরকম চড়া দাম থাকলে কয়েকজন মিলে ভাগাভাগি করে গরু কুরবানী দিতে হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো:সাহিদুর রহমান বলেন, এ বছর কুরবানী ঈদের জন্য ৩২ হাজার ৭০০ পশুর চাহিদা রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রানীসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ছোট-বড় খামারীদের যাবতীয় তথ্য, পরামর্শ, ভ্যাকসিন, এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। খামারীদের সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ঘাস-খড়ের পাশাপাশি খৈলগুঁড়া ও ভুসি খাওয়ানোর পরামর্শ প্রদান করা হয়। এ বছর সাধারণ মানুষজনের চাহিদা পূরণ করেও পশু উদ্বৃত্ত থাকবে এবং খামারীরা ন্যার্য্য মূল্য পাবেন বলে প্রত্যাশা করছি।