নিউজ ডেস্ক
টানা বর্ষণ ও ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার সীমান্তঘেঁষা নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় ১৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাতের অন্ধকারে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হয়েছে বহু মানুষকে। এর মধ্যে সোমবার (২ জুন) ৯টার পর শুরু হয়েছে বৃষ্টি। এতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সরেজমিনে দেখা গিয়ে, ত্রিপুরা এলাকার পাহাড়ি ঢলেন পানি আখাউড়া স্থলবন্দরের যাওয়ার বঙ্গেরচর এলাকায় সড়কটি দিয়ে অতিক্রম করছে। শুধু তাই নয়, আশ-পাশের খালগুলো পানিতে টইটুম্বুর। আর সেই খালের মধ্যে জমানো পানি ঢুকে দোকানসহ ঘর-বাড়িতে। এতে থমকে গিয়েছে সেখানকার জীবনযাত্রা। দোকান পানি ঢোকায় স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যাবসাবাণিজ্য। তবে স্থলবন্দরে বানিজ্য সচল রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালাক মাহমুদুল হাসান বলেন, আকস্মিক বন্যায় আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটেনি। সকাল সাড়ে ১০টা অবধি ৩টি ট্রাকে ১৫ মেট্রিক টন মাছ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। তা ছাড়া ৪০-৪৬ জন যাত্রী ভারতের উদ্দেশে গমণ করেছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আখাউড়া দক্ষিণ, মোগড়া ও মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ১৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সেখানকার ৪৫০টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায়। বন্যাকবলিত এলাকা ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিএম রাশেদুল ইসলাম বলেন, প্রয়োজনীয় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেখানকার পানিবন্দি কিছু মানুষদের আশ্রয়ণকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া তাদের কাছে শুকনো খাবার পোঁছানোর চেষ্টা চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করা হবে।
জেলা পানি উন্নয়ন নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর রহমান বলেন, সকালে ত্রিপুর হাওরা নদীর পানি বিপৎসীসার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে। পানি বাংলাদেশে ধেয়ে আসছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যে, এ বন্যা এতটাই আকস্মিক ছিল যে অনেক পরিবার প্রস্তুত হওয়ার আগেই পানিবন্দি হয়ে পড়ে। রাতের অন্ধকারে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হয়েছে বহু মানুষকে। অনেকেই নিজের মালামাল রক্ষা করতে না পারায় ঘরবাড়ি ও খামারের ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত ও ঢলের তীব্রতায় মোগড়া, মনিয়ন্দ ও দক্ষিণ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পানি উঠে যায়, ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। গতকাল রোববার উপজেলার ১০টি গ্রাম প্লাবিত ছিল।