আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষদের জন্য পাঠানো খাদ্য ও ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’কে আটক করেছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। ফিলিস্তিনপন্থি আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) পাঠানো এ জাহাজের ১২ জন ক্রুকেও গ্রেফতার করে ইসরায়েলে নেওয়া হয়েছে।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এবং ফ্রান্সের সংসদ সদস্য রিমা হাসান। রোববার স্থানীয় সময় রাত ২টার দিকে ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি নৌবাহিনী জাহাজটি আটক করে। পরে জাহাজসহ সব ক্রুকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও।
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লিখেছে, “সেলিব্রেটিদের বহনকারী সেই সেলফি জাহাজটিকে রোববার মধ্যরাতে ইসরায়েলের উপকূলে নিয়ে আসা হয়েছে। ক্রুদের সবাই আমাদের হেফাজতে নিরাপদে আছেন। তাদেরকে স্যান্ডউইচ এবং পানি সরবরাহ করা হয়েছে। নাটক খতম।”
এর আগে ১ জুন ইতালির সিসিলি উপকূল থেকে গাজার উদ্দেশে রওনা দেয় জাহাজটি। ব্রিটিশ পতাকাবাহী ছোট আকারের এই জাহাজটিতে শিশুখাদ্যসহ কিছু খাদ্যসামগ্রী ছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব ত্রাণসামগ্রী “উপযুক্ত মানবিক চ্যানেলের মাধ্যমে গাজায় পাঠানো হবে।”
গাজার উপকূলে জাহাজ চলাচলে ২০০৭ সাল থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে, যখন হামাস গাজায় ক্ষমতা নেয়। যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে চলতি বছরের ১৯ মার্চ গাজায় ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। মার্চের প্রথমদিকে খাদ্য ও ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রবেশ প্রায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে গাজার জনগণ ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ-সমালোচনার মধ্যেই গাজার উদ্দেশে ত্রাণ পাঠানোর উদ্যোগ নেয় ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন। তবে ভূমধ্যসাগরে জাহাজ আটক ও যাত্রীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।
এদিকে জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা অ্যালবানেজ এই অভিযাত্রাকে “সাহসী এবং সংহতিপূর্ণ” বলে উল্লেখ করেছেন। এক্সে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, “ম্যাডলিনের যাত্রা হয়তো শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু মিশন এখনও শেষ হয়নি। গাজার জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে ভূমধ্যসাগরের প্রতিটি বন্দর থেকে ত্রাণ পাঠানো উচিত।