
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আমেরিকা নয় জার্মানিকে এখন আর সবচেয়ে বড় শত্রু দেশ হিসেবে দেখে রাশিয়ানরা। রাশিয়ার স্বাধীন জনমত গবেষণা সংস্থা লেভাদা সেন্টার পরিচালিত এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির জরিপ অনুযায়ী, রাশিয়ানদের মতে বর্তমানে সবচেয়ে শত্রুভাবাপন্ন দেশ হলো জার্মানি। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে এই তালিকায় শীর্ষে ছিল আমেরিকা। বর্তমানে শত্রু দেশের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে আমেরিকা।
এক সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সম্পর্ক ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। ওবামার আমলে ক্রিমিয়া দখল, ট্রাম্পের সময়ে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ এবং বাইডেনের নেতৃত্বে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে কড়া অবস্থান—সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ছিল রাশিয়ার প্রধান ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু এখন চিত্রটা অনেকটাই বদলে গেছে।
জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে মাত্র ৪০% রাশিয়ান যুক্তরাষ্ট্রকে প্রধান শত্রু হিসেবে দেখেন—যা আগের বছরের তুলনায় ৩৬ শতাংশ কম। এই পরিবর্তনের পেছনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছুটা নমনীয় কূটনৈতিক অবস্থানকে কারণ হিসেবে দেখছে লেভাদা সেন্টার।
বর্তমানে ৫৬% রাশিয়ান জার্মানিকে প্রধান শত্রু মনে করেন। এরপর যুক্তরাজ্য (৪৯%) এবং ইউক্রেন (৪৩%) স্থান পেয়েছে।
২০২২ সালের আগে মাত্র ১৬% রুশ জার্মানিকে শত্রু হিসেবে দেখত। তবে বর্তমান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। ইউক্রেনকে ব্যাপক অস্ত্র সহায়তা ও মস্কোর অভ্যন্তরে হামলার সক্ষমতা সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের হুমকি রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, “জার্মানি এখন সরাসরি যুদ্ধের অংশীদার। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে তারা আবারও ধ্বংসের পথে হাঁটছে।”
জরিপে রাশিয়ার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র বা বন্ধু হিসেবে যেসব দেশের নাম এসেছে, সেগুলো হলো—বেলারুশ (৮০ শতাংশ), চীন (৬৪ শতাংশ), কাজাখস্তান (৩৬ শতাংশ), ভারত (৩২ শতাংশ), উত্তর কোরিয়া (৩০ শতাংশ)
গত বছরের তুলনায় এই তালিকায় বিশেষ পরিবর্তন না এলেও, উত্তর কোরিয়ার নাম উল্লেখ করা উত্তরদাতাদের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। রুশ রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার দাবি অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা ইউক্রেনীয় দখলদার বাহিনী থেকে রাশিয়ার কার্স্ক অঞ্চল ‘মুক্ত’ করতে সাহায্য করেছিল।
অন্যদিকে, ইরানকে প্রধান মিত্র হিসেবে উল্লেখ করা উত্তরদাতাদের সংখ্যা ২০২৪ সালের ২২% থেকে কমে ১১% হয়েছে।
লেভাডা সেন্টার গত ২২ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ১ হাজার ৬শ’ ১৩ জন রুশ প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে এই জরিপটি পরিচালনা করে।