স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাংস চুরির অভিযোগে এক নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার করা আসামিদের ছিনিয়ে নিতে থানা ঘেরাও করে রাখেন শতাধিক গ্রামবাসী।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাংস চুরির অভিযোগে এক নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার করা আসামিদের ছিনিয়ে নিতে থানা ঘেরাও করে রাখেন শতাধিক গ্রামবাসী।
বুধবার (১১ জুন) থানা চত্বরে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা পর্যন্ত গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) পিকআপে আসামিদের আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ।
আটককৃত আসামিরা হলেন- উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের রিপনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন, মোমিনের স্ত্রী পারভিন খাতুন ও বক্করের স্ত্রী লিপি খাতুন।
সরেজমিন থানা চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, থানা চত্বরে উৎসুক জনতার ভিড়। পুলিশ আসামিদের গাড়িতে তুলছেন। আর জনগণ আসামি নিয়ে যেতে বাধা প্রদান করছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে ধস্তাধস্তি হয়।
এসময় মির্জাপুর গ্রামের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি রিপন বলেন, ওই নারী আমার বাড়ি থেকে ৪১ হাজার টাকা ও মাংস চুরি করে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। পুলিশ চোরের পক্ষ নিয়ে আমার স্ত্রীসহ তিনজনকে ধরে এনেছে। আমরা চোরের শাস্তি ও আটকদের ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।
একই এলাকার আমিরুলসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ওই নারী একজন চোর। এলাকার বিভিন্ন বাড়ি থেকে চুরি করেছে। সেদিন লোকজন ধরে বিচার করেছে। পুলিশ আমাদের লোক ধরে এনেছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত সোমবার বিকেলে প্রতিবেশীর ঘরে ঢুকে ফ্রিজ থেকে মাংস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে ভুক্তভোগী নারীর বিরুদ্ধে। সে সময় প্রতিবেশীর স্ত্রী তাকে ধরে বাড়ির উঠানে পেয়ারা গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করে মাংস কেড়ে নেন। একপর্যায়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান স্বামী।
মামলার বাদী বলেন, ষড়যন্ত্র করে চুরির নাটক সাজিয়ে আমার সঙ্গে অন্যায় করেছে গ্রামের লোকজন। আমি বিচারের আশায় থানায় মামলা করেছি। কিন্তু মামলা তুলে নেওয়ার জন্য সবাই হুমকি দিচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রশিদ বলেন, শারীরিক নির্যাতন, ভাঙচুর-লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগে এক নারী মামলা করেছেন। মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
থানা ঘেরাও করার ঘটনা স্বীকার করে কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলাইমান শেখ বলেন, আসামিদের আদালতে নেওয়ার সময় গ্রামের লোকজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবুও কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের আদালতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।