
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রখর তাপপ্রবাহে গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলেছে দ্রুত। বিশেষ করে গত মে মাসে বরফ গলার হার অনেক বেশি ছিল। যা বিগত বছরের গড়ের চেয়ে অনেক দ্রুত। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা এ কারণে বাড়তে পারে সাগরের পানি।
ডেনমার্কের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, গ্রিনল্যান্ডের বরফস্তর মে মাসের প্রথম দিকেই ব্যাপক হারে গলতে শুরু করে, যা ওই সময় সাধারণত খুব একটা দেখা যায় না। এএফপি, বাসস এ তথ্য দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির বিশেষজ্ঞ লুইসো রোমেরো বলেন, ‘ গত ১ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত সময়টিতে প্রায় ৩৬ বিলিয়ন টন (৩৬ হাজার কোটি টন) বরফ গলেছে। এটি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।’
তিনি বলেন, ‘১৯৮১ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ওই সময়কালে গড় বরফ গলনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮ বিলিয়ন টন। এবারের গলন হার তা থেকে চারগুণেরও বেশি।’
মে মাসে গ্রিনল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল। কিছু অঞ্চলে একটানা এক সপ্তাহ পর্যন্ত তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এই অস্বাভাবিক উষ্ণতা বরফের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে এবং বরফ গলন তরান্বিত করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলে গেলে তা বৈশ্বিক সমুদ্রপৃষ্ঠ বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় উৎস হয়ে উঠতে পারে। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম বরফস্তর হিসেবে এখানে প্রায় ২৩ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বরফ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, গ্রিনল্যান্ডের সমস্ত বরফ যদি গলে যায়, তবে সমুদ্রপৃষ্ঠ প্রায় সাত মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
রোমেরো বলেন, ‘এই সময়কার উষ্ণতা ও বরফ গলনের মাত্রা এক ভয়াবহ বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করে।’ তিনি জানান, বরফ গলার মৌসুম সাধারণত জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হয়, কিন্তু এবার মে মাসেই তা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শুরু হয়েছে। রোমেরো বলেন, ‘এটা একটি পরিষ্কার সতর্কবার্তা যে, বরফ গলনের হার ও সময়সীমা পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং সেটা সরাসরি মানবসৃষ্ট উষ্ণায়নের সঙ্গেই সম্পর্কিত।’
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন আগাম ও তীব্র গলন ঘটছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।