
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনার কোনো অগ্রগতি দেখছে না যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ধৈর্য হারাচ্ছেন। ইরানের সঙ্গে সংঘাতের আশঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিজেদের কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত ছিলাম, কিন্তু এখন আর ততটা আত্মবিশ্বাসী নই। তারা সময়ক্ষেপণ করছে বলেই মনে হচ্ছে, যা দুঃখজনক।’ বুধবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও জানান, আলোচনার সুযোগ দিতে তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা না চালাতে বলেছিলেন। কিন্তু এখন ধৈর্য হারাচ্ছেন।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, ‘বিপজ্জনক’ অঞ্চলগুলো থেকে কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এএফপি ও বাসস এ তথ্য দিয়েছে।
সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘তাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে কারণ এটি বিপজ্জনক স্থান হতে পারে। আমরা সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছি, এখন দেখা যাক কী হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইরান পরমাণু অস্ত্র পেতে পারে না, বিষয়টা একেবারে পরিষ্কার। আমরা তা কখনোই অনুমোদন করব না।’
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে ইরাকে মার্কিন দূতাবাসের কর্মী সংখ্যা কমানো হয়েছে। কুয়েত ও বাহরাইন থেকেও কিছু কর্মী সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে খবর রয়েছে।
এদিকে একইদিনে ইরানের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, সংঘাত শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হবে।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ বলেন, ‘তাদের সব ঘাঁটি আমাদের আওতায় রয়েছে, আমরা সেগুলোর অবস্থান জানি।প্রয়োজনে কোনো দ্বিধা ছাড়াই সেগুলোকে লক্ষ্য করব।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহ চাইলে তা হবে না, আলোচনা সফল হবে। তবে যুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্রই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড়টি কাতারে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাগদাদ বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলায়মানি নিহত হওয়ার পর ইরান ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
কূটনৈতিক পথে সমাধানের সুযোগ রাখলেও আলোচনায় ব্যর্থ হলে সামরিক পদক্ষেপের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
ইরানের সঙ্গে নতুন একটি চুক্তি করতে এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচ দফা আলোচনা হয়েছে। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। সেই চুক্তির বিকল্প খোঁজার লক্ষ্যেই এই নতুন আলোচনা চলছে।
ইরান দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে।