
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের তাবরিজ শহরে ফের হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে এই হামলায় হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম’র বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর চারটার দিকে দেশটির রাজধানী তেহরানে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েল। এ হামলাকে ‘রাইজিং লায়ন’ নাম দিয়েছে ইসরাইল।
এ সময় তেহরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) সদর দপ্তরে হামলা হয়েছে বলে জানায় ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। হামলায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান হোসেন সালামি নিহত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন, খতম-আল আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দফতরের কমান্ডার গোলামালী রশিদ। এছাড়া ইসরায়েলের এ হামলায় ইরানের ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা তাসনিম।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ বলেছেন, ‘ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ইরানে আগাম প্রতিরোধমূলক হামলা চালানো হয়েছে।’ এ হামলার পর ইসরায়েলে ‘বিশেষ জরুরি অবস্থা’জারি করা হয়েছে।
এ হামলার পর ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসরায়েলকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এমনকি ইসরায়েলের জন্য করুণ ও যন্ত্রণাময় পরিণতি অপেক্ষা করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও হামলার পরে জানান, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে।
নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে ইসরায়েল অপারেশন রাইজিং লায়ন শুরু করেছে, যা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য ইরানের হুমকিকে প্রতিহত করার জন্য একটি অভিযান। আমাদের মিশন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত যতদিন প্রয়োজন এ অভিযান চলবে।’
নেতানিয়াহু বলেন, এই অভিযানের লক্ষ্য ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করা।
এদিকে তেহরানে হামলার জবাবে ইরানও ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাতে পারে। এমন আশঙ্কা থেকে জেরুজালেমের সুপারশপগুলোয় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে খাদ্য ও পানি। মজুত করার জন্য মানুষ এখন এগুলো হুমড়ি খেয়ে কিনছে। একই কারণে ফাঁকা হয়ে গেছে তেল আবিবের রাস্তাঘাট।
শুক্রবার রাত ৩টার দিকে সাইরেনের শব্দ ও মোবাইলের সতর্কবার্তায় ঘুম ভাঙে ইসরায়েলের জনগণের। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে মানুষকে জানানো হয়, তাদের সামনে একটি গুরুতর হুমকি রয়েছে। তাই, সবাই যেন আশ্রয়কেন্দ্রের কাছাকাছি স্থানে অবস্থান করে।
ইসরায়েলের জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, সারা দেশে রক্ত সংগ্রহের কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে এবং যেসব রোগী বাড়ি ফিরে যাওয়ার মতো কিছুটা সুস্থ, তাদেরকে ছেড়ে দিচ্ছে ইসরায়েলের হাসপাতালগুলো।
অন্যদিকে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পশ্চিম তীরে সব ফিলিস্তিনি শহরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
এইসব প্রস্তুতির মূল কারণ পাল্টা হামলার আশঙ্কা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে প্রায় ১০০টি ড্রোন এরই মধ্যে ইসরায়েলের দিকে রওনা হয়েছে।