জামালপুর প্রতিনিধি।
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক আলোচিত রূপান্তরের ঘটনার জন্ম দিয়েছেন উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়নের ওর্য়াড যুবলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম মিন্টু। একাধারে যুবলীগ, গণঅধিকার পরিষদ, জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন (জিসাস) হয়ে সর্বশেষ তিনি এখন যুক্ত হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সঙ্গে।
শনিবার (১৪ জুন) জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সাক্ষরিত মাদারগঞ্জ উপজেলা শাখার সমন্বয় কমিটি এনসিপির কেন্দ্রীয় ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়। সেখানে তাকে এনসিপির মাদারগঞ্জ উপজেলা শাখার যুগ্ম সমন্বয়কারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই পরিবর্তনের ঘটনায় আলোচনার ঝড় উঠেছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২২ নভেম্বর মাজহারুল ইসলাম মিন্টু উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে জামালপুর জেলা জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। তখনও তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। এরপর হঠাৎ করেই তিনি নিজের রাজনৈতিক অভিমুখ ঘুরিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগ দেন এবং সেখানে তিনি যুগ্ম সমন্বয়কারীর পদ লাভ করলেন।
এই আকস্মিক রদবদলে যুবলীগ, গণঅধিকার পরিষদ এবং জিসাস—তিনটি সংগঠনই ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছে।
এ বিষয়ে চরপাকেরদহ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান জানান, “মিন্টু এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি। তার নাম এখনও আমাদের কমিটিতে রয়েছে।”
অন্যদিকে উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হামিদুর রহমান বলেন, “কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদ না পাওয়ায় তিনি আমাদের সংগঠন থেকে মৌখিকভাবে সরে গেছেন। তবে লিখিত কোনো পদত্যাগপত্র জমা দেননি।”
জিসাসের জেলা সংগঠক রুবেল আহমেদ মন্তব্য করেন, “মিন্টু এখনো আমাদের তালিকায় রয়েছেন। তবে তার নাম অন্য দলে দেখায় আমরা দ্রুত সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।”
এ বিষয়ে জাতীয় যুবশক্তির যুগ্ম আহ্বায়ক হিফজুর রহমান বকুল জানান, “মিন্টু ভাই আমাদের দলের আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে এনসিপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন এই প্ল্যাটফর্মেই তিনি জনগণের জন্য কার্যকরভাবে কাজ করতে পারবেন।”
মিন্টুর এমন রাজনৈতিক রূপান্তর নতুন কিছু নয়, তবে এত দ্রুত সময়ে একের পর এক দল পরিবর্তন এবং একাধিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে অবস্থান করায় রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন এটি তার কৌশল, কেউ বলছেন নেতৃত্বের প্রতি আকাঙ্ক্ষা। স্থানীয়ভাবে অনেকে এ ধরনের পদক্ষেপকে “ব্যক্তিগত লাভের রাজনীতি” বলে আখ্যা দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাজহারুল ইসলাম মিন্টু মুঠোফোনে জানান, তিনি যুবলীগ করেননি। গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপিতে কে বা কারা তার নাম দিয়েছে তা তিনি জানেন না। তবে বর্তমানে তিনি জিসাসের সঙ্গে যুক্ত আছেন বলে স্বীকার করেছেন।