নিজস্ব প্রতিবেদক।
দেশে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঘিরে যখন নানা বিতর্ক, তখন সেই বিতর্ককে ছাপিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন আমলা হাফেজিয়া ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। কুষ্টিয়া জেলা উলামা পরিষদের তত্ত্বাবধানে হিফজুল কুরআন কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে তারা প্রমাণ করলেন—তাদের শিক্ষা ও দক্ষতা কোনভাবেই পিছিয়ে নেই মূলধারার শিক্ষার্থীদের তুলনায়।
শনিবার সকালে মিরপুর উপজেলার আমলা হাফেজিয়া ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার হলরুমে অনুষ্ঠিত হয় এসব শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। পরীক্ষায় এ+ প্রাপ্ত কৃতি হাফেজদের সংবর্ধনা জানানো হয়। একইসাথে মাদরাসার প্রথম সাময়িক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল আজম । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমলা সদরপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গাফফার, এলাকার বিশিষ্টজন মো. রুহুল ইসলাম খান, অঞ্জনগাছী মহিলা মাদ্রাসার মুহতামীম মাওলানা শিহাবুর রহমান, ছাতিয়ান সাতকামড়া মহিলা মাদ্রার মুহতামীম মাওলানা আরিফুর রহমান। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আমলা হাফেজিয়া ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার সভাপতি মো. হাসমত আলী, প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আব্দুর রহমান, কমিটির সদস্য মো. মিলন হোসেনসহ মাদ্রাসার শিক্ষক এবং অভিভাবকবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, হিফজুল কুরআনে এ+ প্রাপ্ত ছাত্ররা শুধু কুরআনের আলো বুকে ধারণ করছে না, বরং তারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি নৈতিক ও মানবিক ভিত্তি গড়ে দিচ্ছে। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা আজ যেভাবে নিজেদের মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তা পুরো জাতির জন্য গর্বের বিষয়।
বক্তারা আরও বলেন, ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক চরিত্র গঠনে মাদ্রাসাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আজকের এই কৃতি হাফেজরাই আগামীর নৈতিক সমাজের স্থপতি হবে।
অনুষ্ঠান শেষে কুষ্টিয়া জেলা উলামা পরিষদের তত্ত্বাবধানে হিফজুল কুরআন কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় এ+ প্রাপ্ত হাফেজদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। একইসাথে প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদেরও পুরস্কৃত করা হয়।
এই আয়োজন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে এবং প্রমাণ করেছে—সুশৃঙ্খল শিক্ষাব্যবস্থা, সঠিক দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও দেশের গর্ব হতে পারে।