
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।, জনতারকথা।
ঘরে তৈরি বিষাক্ত মদ খেয়ে ৫ জনের মৃত্যুর পর সেই মদ তৈরিকারক ও কথিত হোমিও চিকিৎসক শেখ মোসলেম আলীকে (৭৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে নগরীর রায়ের মহল এলাকার মালেক সড়ক এলাকায় তার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা যায়, মোসলেম আলী এলাকায় হোমিও চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত। মাতৃশোধন হোমিও ফার্মেসি নামে তার একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। এর আড়ালে তিনি বাড়িতে বসে বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে মদ তৈরি করতেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আবু তারেক জানান, মোসলেম আলী এলকোহল, ঘুমের ওষুধ ও চুনের পানি দিয়ে ঘরে বসে মদ তৈরি করতেন।
পুলিশ জানায়, তার কাছ থেকে মদ কিনে গত বৃহস্পতিবার আড়ংঘাটা থানার পূর্ব বিল পাবলা মদিনা নগর এলাকার একটি ঘেরে বসে কয়েকজন সেই মদ পান করেন। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাতে একজন এবং শনিবার আরও ৪ জন মারা যান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শনিবার রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মদ বিক্রেতাকে আটক করা হয়।
সূত্র জানায়, এর আগে ওই বিষাক্ত মদ পান করে শুক্রবার রাতে খুলনা পাবলিক কলেজের দ্বিতীয় গেটের সামনের বাসিন্দা তোতা মিয়া মারা যান। কিন্তু স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরবর্তীতে শনিবার সকালে একই এলাকার গৌতম, বিকেলে বয়রা শেরের মোড় এলাকার বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন সাবু, বয়রা মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা আফরোজ হোসেন বাবু এবং রায়ের মহল মল্লিক বাড়ির বাসিন্দা সাজ্জাদ মারা যান। মদ পানে গুরুতর অসুস্থ বয়রা দাশপাড়া এলাকার বাসিন্দা সনু খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। একই কারণে অসুস্থ উজ্জ্বল ও সাত্তার নামের আরও দুইজনকে আশংকাজনক অবস্থায় খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমানকে বাসসকে জানান, আফরোজ হোসেন বাবু এবং সাবুর লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। বাকিদের লাশ দাফন ও সৎকার করা হয়েছে। এছাড়া বিষাক্ত মদ তৈরির অভিযোগে গ্রেফতারকৃত হোমিও চিকিৎসক মোসলেম আলীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে খুলনার আড়ংঘাটা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।