নিজস্ব প্রতিবেদক |
বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেশ কিছু আলোচিত ও মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের সামনে এমন এক বাস্তবতা তুলে ধরেছে, যা শুধুই শোক নয়—একটি বড় শিক্ষা। সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। কখনও ঘর থেকে বেরিয়ে, কখনও মত প্রকাশ করে, কখনও খাবার খেয়ে, এমনকি কারো বাড়িতে বেড়াতে গিয়েও প্রাণ দিতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
নিচে এমন পাঁচটি ঘটনা নিয়ে আলোচনা করা হলো, যেগুলো আমাদের সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে:
২০১৬ সালের ২০ মার্চ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের মেধাবী ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হন। পরদিন তার মরদেহ ক্যান্টনমেন্ট এলাকার একটি ঝোপে পাওয়া যায়। ঘটনার ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার আজও হয়নি।
👉 এই ঘটনা আমাদের শিখিয়েছে: নারীরা কি স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে না?
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা হন।
👉 বার্তা স্পষ্ট: যা খুশি তাই বলা যাবে না—সত্য বলার চরম মূল্য দিতে হয়!
তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবক রাস্তার পাশে অচেনা জায়গা থেকে খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে তার মৃত্যু হয়।
শিক্ষা: যেখানে-সেখানে খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। সতর্ক না থাকলে মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে।
আছিয়া নামের এক গৃহবধূ বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হন এবং পরে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
বার্তা: ঘর কি আর নিরাপদ? আত্মীয় বাড়িতেও এখন ভরসা নেই নারীর জন্য।
পারভেজ নামে এক তরুণ স্থানীয় একটি বিষয়ে হাসি দিয়ে মন্তব্য করায় প্রতিপক্ষের রোষানলে পড়েন। কথিতভাবে ‘অপমানজনকভাবে হাসা’ তার মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
👉 শিক্ষা: আজকাল কারো সামনে ‘হাসাও’ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে!
এ ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন মনে হলেও এগুলো আসলে একটি ভয়াবহ সামাজিক সংকেত। আমরা আজ এমন এক সমাজে বাস করছি যেখানে স্বাভাবিক কিছু কাজ—বাহিরে যাওয়া, কথা বলা, খাওয়া, বেড়াতে যাওয়া কিংবা হাসাও—ঝুঁকির হয়ে দাঁড়িয়েছে।
➡️ আমাদের প্রয়োজন সচেতনতা, বিচার নিশ্চিতকরণ, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।
➡️ না হলে, আগামী দিনে এই তালিকায় নতুন নতুন নাম যুক্ত হওয়া অবধারিত!