
আক্তারুল ইসলাম, মিরপুর, কুষ্টিয়া।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নওদাপাড়া চৌদুয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হলো “কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতনতা ও বাল্যবিবাহ নিরোধ” বিষয়ক সভা এবং অভিভাবক সমাবেশ। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় আয়োজিত এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, স্থানীয় সুধীজন ও জনপ্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মিরপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, “বাল্যবিবাহ আমাদের সমাজে এক মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। এটি একটি মেয়ের শারীরিক, মানসিক ও শিক্ষাগত বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা না গেলে, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ঝুঁকির মুখে পড়বে। আমরা চাই, প্রতিটি কন্যাশিশু স্বপ্ন দেখুক, শিক্ষিত হোক এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে উঠুক।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিরপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মারফত আফ্রিদী। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার এবং সমাজকে একত্রিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। সংবাদমাধ্যমও এই বিষয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম মাস্টার। তিনি বলেন, “আমাদের বিদ্যালয়ে শুধু শিক্ষাদানই নয়, শিক্ষার্থীদের সুস্থ সামাজিক জীবনের জন্যও আমরা সচেতন। এ ধরনের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ এবং কয়েকজন অভিভাবক। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাদের মতামত ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করে, যা উপস্থিত সবার মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
আলোচনাসভা শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয় এবং অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে একটি সচেতনতামূলক ভিডিও প্রদর্শন করা হয়, যেখানে প্রজনন স্বাস্থ্য ও বাল্যবিবাহের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানটি একটি প্রাণবন্ত ও গঠনমূলক উদ্যোগ হিসেবে প্রশংসিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, এমন আয়োজন আরও বেশি বেশি হওয়া দরকার, যেন সমাজের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সচেতনতার আলো ছড়িয়ে পড়ে।
বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই সমাবেশ কিশোরীদের অধিকার, স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং একটি আলোকিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।