কুষ্টিয়ার মিরপুরে পরিবেশকের গাড়ি থেকে ৪০ হাজার টাকা ছিনতাই: জনবহুল এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিস্ময়

Spread the love

আক্তারল ইসলাম, মিরপুর, কুষ্টিয়া।

মিরপুর উপজেলায় জনবহুল এলাকায় পরিবেশকের ডেলিভারির গাড়ি থেকে ছিনতাইয়ের একটি ঘটনায় এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাত আনুমানিক ৮টা ৫০ মিনিটে, মিরপুর উপজেলার ভারল বাঁশতলা রেল ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পোড়াদহ বাজারের পরিবেশক মিলন হোসেনের মালিকানাধীন একটি ডেলিভারির গাড়ি ফ্রেশ, আকিজ ও এমইপি কোম্পানির পণ্য বিক্রয় শেষে ফেরার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হয়।

গাড়িতে থাকা কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি রফিকুল ও সুমনের দাবি, ঘটনার সময় একদল ছিনতাইকারী হঠাৎ করে তাদের গাড়ির গতিরোধ করে। এরপর তারা গাড়িতে থাকা নগদ ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
তৎক্ষণাৎ দুই বিক্রয় প্রতিনিধি জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহায়তা চান। খবর পেয়ে মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুল ইসলামের নির্দেশে সোন্দাহ পুলিশ ক্যাম্পের টু-আইসি সজয়ের নেতৃত্বে একটি টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছিনতাইয়ের শিকার কাউকে খুঁজে পায়নি। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক তদন্ত চালানো হয়। তবে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় একজন বাসিন্দা জানান, “এই এলাকাটা বেশ ঘনবসতিপূর্ণ। সন্ধ্যার পরেও রাস্তায় লোকজন চলাফেরা করে। এখানে ছিনতাই হওয়া খুবই অস্বাভাবিক ব্যাপার। বিষয়টা রহস্যজনক মনে হচ্ছে।”
এদিকে ভুক্তভোগী পরিবেশক মিলন হোসেন জানান, “আমি তিনটি কোম্পানির পরিবেশক। প্রতিদিন বিক্রয়ের টাকা রাতে গাড়িতে করে অফিসে আসে। হঠাৎ রাতে ফোন পেয়ে জানতে পারি আমার ডেলিভারির গাড়ি থেকে পুরো বিক্রয়ের টাকা ছিনতাই হয়েছে।”
তবে মিলন হোসেন এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। এখনো পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশ মনে করছেন, এটি কোনো পরিকল্পিত ঘটনা হতে পারে। কারণ, ডেলিভারির গাড়ি নিয়মিত নির্দিষ্ট রুটে যাতায়াত করে এবং স্থানীয়ভাবে পরিচিত। তাছাড়া একটি জনবহুল এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সাধারণত চিৎকার বা প্রতিরোধের ঘটনা ঘটে থাকে। কিন্তু এমন কিছু না ঘটায় অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

তদন্তসাপেক্ষে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা ও এলাকাবাসী। এদিকে পরিবেশক মিলনের ব্যবসায়িক নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন, এত পরিমাণ নগদ টাকা গাড়িতে করে পরিবহন করাও ঝুঁকিপূর্ণ এবং ভবিষ্যতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

এ ঘটনায় মিরপুর উপজেলা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সমিতির এক নেতা বলেন, “একটি জনবহুল এলাকায় এমন ছিনতাই হলে আমরা নিরাপদ বোধ করবো কীভাবে? প্রশাসনের উচিত দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বের করা।”

ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *