
কুমিল্লার মুরাদনগরে একই দিনে জনসভা ডেকেছে বিএনপি ও এনসিপি। তবে শুক্রবার পর্যন্ত দুই দলের কেউই প্রশাসনের কাছে জনসভার অনুমতি চেয়ে লিখিত আবেদন করেনি বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। এ নিয়ে উপজেলাজুড়েই উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) আন্দিকোট ইউনিয়নের হায়দরাবাদ শামসুল হক কলেজ মাঠে জনসভার ডাক দিয়েছে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ।
অপরদিকে একই দিনে বিএনপির সভাস্থলের পার্শ্ববর্তী আকবপুর ইউনিয়নের পীর কাশিমপুর হাই স্কুল মাঠে জনসভার ডাক দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি বাঙ্গরা বাজার থানা শাখা। সেই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাবা মো. বিল্লাল হোসেনের।
বিএনপির সঙ্গে একই দিনে এনসিপির জনসভা ডাক দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি একটি নতুন দল। তাদের অবশ্যই স্বাগত জানাই। তবে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি তাদের কখনোই প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করে না। মুরাদনগরে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ৯০ শতাংশ ভোট পাবেন দাদা কায়কোবাদ।
বিএনপির জনসভার আয়োজনের খরচের উৎস জানতে চাইলে, মহিউদ্দিন অঞ্জন আরও বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত টাকা এবং দলীয় ফান্ড থেকেই এ জনসভার আয়োজন করা হচ্ছে।
তিনি এনসিপির জনসভার খরচের বিষয়ে অভিযোগ করে বলেন, মুরাদনগরে প্রত্যেকটি জায়গা থেকে এখন চাঁদাবাজি করছে এনসিপির লোকজন। আর সাধারণ মানুষও ভয়ে তাদের চাঁদা দিচ্ছে, কারণ যিনি চাঁদা নিচ্ছেন তিনি উপদেষ্টার বাবা।
তবে এনসিপির লোকজনের চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মুরাদনগর উপজেলা শাখার বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক উবাইদুল হক সিদ্দিকী বলেন, এনসিপির নেতাকর্মীদের নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিটি অনুষ্ঠান করা হচ্ছে।
বিএনপির নেতাকর্মীরা নিজেদের চাঁদাবাজি আড়াল করতেই উপদেষ্টার বাবা এবং এনসিনপির নেতাকর্মীদের ওপর মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ দিচ্ছেন। এনসিপি তার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করবে জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার মধ্য দিয়ে।
একই দিনে পাশাপাশি ইউনিয়নে বিএনপি ও এনসিপির জনসভাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, জনসভার বিষয়ে বিএনপি ও এনসিপির নেতাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দুই দলের পক্ষ থেকে জানিয়েছে, তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।
তারপরেও আমাদের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে দুই জনসভা স্থলে। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা পেতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়টি ইউএনওকে জানিয়ে রেখেছি।
তবে বিএনপি ও এনসিপির জনসভাকে কেন্দ্র করে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুর রহমান জানান, জনসভা করার বিষয়ে দুই দলের কারও পক্ষ থেকে কোনো অনুমতি চাওয়া হয়নি। বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি।
অনুমতি না চাওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসভা বন্ধ করা হবে কি না জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, এ বিষয়ে ডিসির সঙ্গে কথা বলে বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত সময় রয়েছে আবেদন করার।