
সম্পাদকীয়:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে এসেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলটির অভ্যন্তরে নানা ধরনের সংঘর্ষ, বিভাজন ও নেতৃত্ব সংকট স্পষ্টভাবে নজরে পড়ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় দলের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, এমনকি সহিংস পরিস্থিতি দেশব্যাপী উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এ ধরনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল শুধু দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা নয়, বরং বৃহত্তর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতিও হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিএনপি বর্তমানে একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছে—নেতৃত্বহীনতা, দিকনির্দেশনার অভাব এবং মাঠ পর্যায়ের অসন্তোষ এর মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ও তৃণমূলের বাস্তবতা একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থানে চলে গেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত হওয়া উচিত জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা, তাদের স্বার্থে কথা বলা এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা। কিন্তু যদি দল অভ্যন্তরেই অব্যবস্থা ও দ্বন্দ্বে জর্জরিত থাকে, তাহলে তারা কীভাবে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের নেতৃত্ব দেবে?
এ মুহূর্তে বিএনপির প্রয়োজন একটি স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক ও দায়িত্বশীল নেতৃত্ব কাঠামো। দলের শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আস্থার সংকট নিরসন এবং বাস্তবমুখী রাজনীতি চর্চার মাধ্যমেই তারা আবার গণমানুষের আস্থা অর্জন করতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি শক্তিশালী বিরোধী দলের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি। সেই দায়িত্ব পালনে বিএনপিকে এখনই আত্মসমালোচনার মাধ্যমে পথনির্দেশ ঠিক করতে হবে। না হলে, দলীয় কোন্দল শুধু বিএনপিকেই নয়, দেশের সার্বিক রাজনৈতিক ভারসাম্যকেও নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।