সাভারে সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, গ্রেফতার ২

Spread the love

নিউজ ডেস্ক

সাভার উপজেলা সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক ও সাভারে কর্মরত সাংবাদিক সোহেল রানার ওপর সন্ত্রাসী হামলা করে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় হামলাকারী দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (২৫ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা।

এর আগে, শনিবার (২৪ মে) বিকেলে সাভার সিটি সেন্টারের পেছনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় গুরুতর আহত সোহেল রানাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় সোহেল রানা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পরে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে দুই হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অজ্ঞাত আরো ২/৩ জন হামলাকারী পলাতক রয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গাজীপুর জেলার কাশিমপুর থানার চক্রবর্তী গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে আল মামুন ইমন (২৬) ও জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী থানার নরপাড়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে শাওন আহমেদ (৩৫)। গ্রেফতার দুইজন অপ্পো মোবাইলফোন কোম্পানির সাভার কাস্টমার সার্ভিসিং সেন্টারের কর্মী। বাকি পলাতক আসামিরা তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী।

জানা গেছে, সাংবাদিক সোহেল রানা শনিবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি মেরামত করার উদ্দেশ্যে সাভার সিটি সেন্টারের পেছনে ইসলাম প্লাজার দ্বিতীয় তলায় অপ্পো মোবাইল কোম্পানির সাভার সার্ভিসিং সেন্টারে যান। অনলাইনে অর্ডার নিয়ে মোবাইলের পার্টস আসতে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে সার্ভিস সেন্টারটির কর্মীরা জানায়। এ সময়টুকু অন্য সার্ভিসিং সেন্টার থেকে সুপার গ্লু আঠা লাগিয়ে চলার পরামর্শ দেয় তারা।

পরবর্তীতে নিউ মার্কেটের একটি সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়ে দেখতে পান তার মুঠোফোনে সিম কার্ডটি নেই। এর কিছুক্ষণ পর পুনরায় অপ্পো সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়ে সিম কার্ডটি আছে কিনা জানতে চাইলে শাওন আহমেদ নামে এক কর্মী সিম কার্ডটি আছে জানিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং পরের দিন এসে যোগাযোগ করতে বলেন। পরের দিন যোগাযোগের জন্য সার্ভিসিং সেন্টারের একটি মোবাইল নম্বর চাইলে সার্ভিসিং সেন্টারের কর্মীদের কোন নাম্বার দেওয়া যাবেনা বলে জানায় অপর আরেক কর্মী আল মামুন ইমন।

সিম কার্ডটির প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে বারবার দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালে সোহেল রানার ওপর উত্তেজিত হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন অপ্পো সার্ভিসিং সেন্টারের কর্মীরা। কথাবার্তার এক পর্যায়ে আল মামুন ইমন ও শাওন আহমেদসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা মিলে সোহেল রানার ওপর এলোপাতাড়ি মাথায় কাচের গ্লাস দিয়ে আঘাত করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। এ সময় সোহেল রানার কাছে থাকা ৯ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পাশের সড়কে নিয়ে ব্যাপকভাবে পিটিয়ে আহত করে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায় তারা। পরে স্থানীয় লোকজন সোহেল রানাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

জানতে চাইলে সাভার উপজেলা সাংবাদিক সমিতির সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আহত অবস্থায় সোহেল রানাকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর দায়িত্বরত চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক তাঁর মাথায় সিটি স্ক্যান, বুকে এক্সরেসহ চিকিৎসকের দেওয়া টেস্টগুলো করা হয়েছে এবং চিকিৎসা চলছে।

এই পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষের কাছে দোষীদের দ্রুত বিচার এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানায় বিএমএসএফসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। বিএমএসএফ সভাপতি আহমেদ আবু জাফর বলেন, সাংবাদিক সোহেল রানা পতিত সরকারের সময় অপ্রতিরোধ্য সংবাদ প্রকাশের জেরে একাধিকবার মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে, এই সময়ে এসেও তার ওপর হামলা অগ্রহণযোগ্য।

এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, ‘ সাংবাদিক সোহেল রানার ওপর হামলার ঘটনায় দুই হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে।

সুত্র: বিডি২৪লাইভ


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *