
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে কালো টাকার দৌরাত্ব থাকবে না ও পেশিশক্তি ব্যবহারের সুযোগ থাকবে না।
তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এ পদ্ধতির পক্ষে একমত। কারণ, এটি একদিকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে, অন্যদিকে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সংসদ গঠন সম্ভব হয়।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে সিলেট নগরীর কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সুলেমান হলে ইসলামপন্থীদের ঐক্য ভাবনা উলামায়ে কেরাম ও তাওহীদি জনতার করণীয় শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি আমরা কিন্তু আজকে নতুন দাবি করি নাই। ২০১৩ সালে মহাসমাবেশে আমরা পিআর পদ্ধতি ঘোষণা করেছিলাম। আমরা এদেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি, ইসলামকে ভালোবাসি। তাই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ক্ষমতার ভারসাম্যতা রক্ষা পাবে। এককভাবে কোনো দল ক্ষমতা যেতে পারবে না। তখন সব দলের প্রতিনিধি দেশ পরিচালনা করবে। আর দেশে কোনো অরাজকতা থাকবে না। বর্তমানে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী শ্রেণিসহ সর্বমহলে এ পদ্ধতিতে নির্বাচনের আলোচনা শুরু করেছে।
বিগত সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ পরিচালনা করে সংবিধানকে বানিয়েছে কাগজ-কলমের পাতার মতো। মন যখন যা চাইছে তাই ওরা সংবিধানে পাশ করেছে। ওদিকে দেশের বারোটা বাজুক বা জনগণ জাহান্নামে যাক ওইখবর আর রাখে নাই। বরংচ তারা আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতকে বিভিন্ন অংশে খুশি করেছে।
সামাজিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে ওলামায়ে কেরামের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুসলমানদের অনৈক্যের কারণেই আজ বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহ দুর্বল হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের মুসলমানরাও নানা ষড়যন্ত্রের শিকার। ইসলামপ্রিয় জনগণকে কোনঠাসা করার চেষ্টাও চলছে। ওলামায়ে কেরামের উচিত পারস্পরিক মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। অতীতে উপমহাদেশের আলেমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জালিমের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, আজও সেই ঐক্য অপরিহার্য।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ সিলেট জেলা সভাপতি হযরত মাওলানা রেদওয়ানুল হক চৌধুরী রাজু।
বিশেষ অতিথি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিস কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর হাফিজ মাওলানা শায়খ মজদুদ্দীন আহমদ, পীর সাহেব বরাইগ্রামী শায়খ মাওলানা নুরুল ইসলাম, জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুফতি রেজাউল করিম আবরার, জামেয়া গলমুকাপন মাদ্রাসার শাইখুল হাদিস শায়খ মাওলানা রুহুল আমিন, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুফতি মাঈনুদ্দীন খান তানভীর, জামেয়া কাজিরবাজার মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা শাহ মমশাদ আহমদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুফতি সাইদ আহমদ, মহানগর সভাপতি ডা. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, শিক্ষা সচিব মাওলানা মাশুক আহমদ সালামী এবং খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুতাছিম বিল্লাহ জালালী প্রমুখ।