গাজায় থামছেই না মৃত্যুর মিছিল, ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৭১

Spread the love

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামাস উৎখাত আর তাদের কবল থেকে জিম্মি উদ্ধারের নামে ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যা চলছেই। প্রতিদিনই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা; দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে লাশের মিছিল। নিরাপদ বলে কোনো স্থান বাকি নেই গাজাবাসীর জন্য। একদিকে আকাশ ও স্থল অভিযান, অন্যদিকে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ; গাজা যেন সাক্ষাৎ নরক হয়ে উঠেছে তার বাসিন্দাদের জন্য।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ভূখণ্ডটি জুড়ে আরও ৭১ ফিলিস্তিনির প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার শিকার হয়েছেন ৫২ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে প্যালেস্টাইন ক্রনিকল।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আরও দেড় শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন ইসরায়েলের সবশেষ ২৪ ঘণ্টার হামলায়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৩১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে উপত্যকাটিতে, যেখানে ৬০ শতাংশেরও বেশি নারী ও শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৯২ জন মানুষ।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজের বরাত দিয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি পৃথক আরেক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সোমবার (২৮ এপ্রিল) দিনভর গাজা জুড়ে ড্রোন ও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী (আইএএফ)। আকাশ থেকে ইসরায়েলের এই সিরিজ হামলায় নারী ও শিশুসহ ৫১ জন নিহত হয়েছে গাজা উপত্যকায়।

ওয়াফা নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রথম হামলার ঘটনাটি ঘটে সোমবার সকালে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে। এতে নিহত হন ৯ জন। এর কাছাকাছি সময়ে খান ইউনিসের নিকটবর্তী আল শরিফ শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালায় আইএএফ। এতে নিহত হন ৪ জন।

এ ছাড়া, গাজার প্রধান শহর গাজা সিটিতে নিহত হয়েছেন মোট ১৯ জন। এদের মধ্যে ৯ জন শহরের মধ্যাঞ্চল, ৩ জন দক্ষিণ গাজা সিটি এবং ৭ জন উত্তর গাজা সিটির বাসিন্দা ছিলেন। উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে নিহত হন আরও ১০ জন। এ ছাড়া উত্তর গাজার বেইত লাহা উপশহরে নিহত হয়েছেন ৯ জন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গাজায় ভয়াবহ এক অভিযানে নামে ইসরায়েলি বাহিনী। দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক আগ্রাসন জারি রাখার পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি টানতে সম্মত হয় নেতানিয়াহু প্রশাসন। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে গাজায় ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ২২৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৫ হাজার ৭৫১ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *