
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজার ১০ লাখ বাসিন্দাকে স্থায়ীভাবে লিবিয়া পাঠানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ট্রাম্প প্রশাসন। পাঁচটি সূত্রের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ শনিবার ওই তথ্য জানায়।
এনবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিকল্পনার বিষয়ে ইসরায়েলকে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
হামাস জানিয়েছে, এ ব্যাপারে তারা কিছু জানে না এখনও। তবে হামাস পরিস্কার করে এনবিসিকে জানিয়েছে, মাতৃভূমি ও দেশের মানুষের বিষয়ে কোনো আপস নয়। গাজাবাসীর ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত গাজার বাসিন্দারাই নেবে।
সূত্র জানিয়েছে এ ব্যাপারে লিবিয়ার নেতৃত্বের সাথেও আলাপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। পরিকল্পনার বিষয়টি জানে এমন দুজন ও যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাবেক কর্মকর্তা ওই তথ্য দিয়েছেন। তবে গৃহযুদ্ধসহ নানা সংকটে জর্জরিত লিবিয়া ওই পরিকল্পনায় কতটুকু সাড়া দিতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সূত্রমতে, পরিকল্পনামাফিক লিবিয়াকে বিলিয়ন ডলার তহবিল দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মন্তব্য চেয়েছিল এনবিসি। তবে তাতে তাঁরা সম্মতি দেন নি। তবে প্রতিবেদন প্রকাশের পর একজন মুখপাত্র এনবিসিকে বলেছেন, ‘এ প্রতিবেদন অসত্য।’
এমনিতেই উচ্ছেদ, তাড়িয়ে দেওয়া শব্দগুলোর সাথে ওই উপত্যকার মানুষ দীর্ঘ লড়াই করছে। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পরিকল্পনায় জটিলতা দীর্ঘতর হওয়ার আশঙ্কা আছে।
ইসরায়েলের বিরতিহীন হামলার মধ্যেও গাজা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করে হামাস। লিবিয়ায় গাজার বাসিন্দাদের স্থানান্তরের বিষয়টি শোনেন নি হামাসের নেতারাও।
এ ব্যাপারে, হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা নিজেদের মাতৃভূমির সাথে মিশে আছে। মাতৃভূমির প্রতি দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং নিজের শিশুদের ভবিষ্যত, পরিবার, মাটি ও মাতৃভূমির জন্য প্রাণ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত।’ এনবিসির এক প্রশ্নের জবাবে নাইম বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের কী হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা একমাত্র ফিলিস্তিনিদেরই এবং গাজাবাসীদেরই।’
ইসরায়েলের সরকারের কাছেও মন্তব্য চেয়েছিল এনবিসি। তবে দেশটির সরকার মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এদিকে গৃহযুদ্ধে কাবু হয়ে পড়া লিবিয়া ধুঁকছে নানা সংকটে। দেশটির দুই এলাকায় থাকা দুই সরকারের বিরোধ তীব্র। দেশটি পশ্চিম অংশে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবদুল হামিদ দবেইবা। অন্যদিকে পূর্ব অংশে নেতৃত্ব দিচ্ছেন খলিফা হাফতার।
এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই দল। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট পরামর্শ দিয়েছে কোনো মার্কিন নাগরিকরা যেন ভ্রমণের জন্য লিবিয়ায় না যায়।
গাজাবাসীর স্থানান্তর প্রসঙ্গে হাফতার নেতৃত্বাধীন মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। অন্যদিকে দবেইবাহ সরকারের কাছে মন্তব্যের জন্য যাওয়া সম্ভব হয়নি।
গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। এখন পর্যন্ত নিহতর সংখ্যা ৫৩ হাজার ছাড়িয়েছে। দুইমাস ধরে গাজায় অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েলের সেনারা। ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক গাজায় ঢুকতে পারছে না।