স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে নেই সাপের অ্যান্টিভেনোম, চারমাসে নিহত দুই

Spread the love

চাঁদপুর প্রতিনিধি।

নদী বেষ্টিত চাঁদপুর জেলায় বর্ষা আসার আগেই বেড়েছে সাপের উপদ্রব্য। সাপের ছোবলে আহত হয়ে নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে গিয়ে সাপের অ্যান্টিভেনোম না থাকায় মৃত্যুর কবলে পড়তে হয় দুই গৃহবধূর। জেলা শহরের বাহিরে সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সগুলোতে ২/১ টি অ্যান্টিভেনোম থাকলেও বেশির ভাগ হাসপাতালে নেই।

জেলা সিভিল সার্জেন অফিসের দেয়া তথ্যমতে, জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সাপের ছোবলে মতলব উত্তরে ১২৩ জন, মতলব দক্ষিণে ৪৪ জন, ফরিদগঞ্জে ৩৬ জন, হাজীগঞ্জে ৪৩ জন, হাইমচরে ১৮ জন, কচুয়ায় ৫ জন, শাহরাস্তি উপজেলায় ২৯ জনসহ মোট আহত ২৯৮ জন রোগী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেয়।

সম্প্রতি রাস্তাঘাটে, ঝোপ-ঝাড়ে সাপের আনাগোনা বেশি দেখা দিয়েছে। সাপের উপদ্রব্য বেশি হওয়ায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, উপজেলা পর্যায়ে সাপের কাটা রোগীর জরুরী চিকিৎসা সেবা ও সাপের অ্যান্টিভেনোম পর্যাপ্ত রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে।

উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত সাপের অ্যান্টিভেনোম নেই দাবি করে চিকিৎসকেরা বলছেন, সাপে কামড় দিলে ওজা বা কবিরাজের কাছে না গিয়ে হাসপাতালে ছুটে যেতে হবে। এটি বিষাক্ত সাপের কামড় না, অবিসাক্ত সাপের কামড় তা পরীক্ষা করার পর অ্যান্টিভেনোম প্রয়োগ করতে হয়। সব সাপের কামড়ে অ্যান্টিভেনোম দিতে হয় না। আহতদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ সাপের কামড়ই অবিসাক্ত।

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহমেদ তানভীর হাসান বলেন, গেল দুই মাসে হাসপাতালে সাপে কামড়ের রোগী আসে ৩৫ জন। এর মধ্যে বিষাক্ত সাপে কামড়ের একজন রোগী পাই এবং তাকে অ্যান্টিভেনোম দেওয়া হয়েছে। তবে এসময়ে সাপে কামড়ের রোগীর চাইতে অ্যান্টিভেনোম কম রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে অ্যান্টিভেনোম দেওয়ার জন্য।

কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাহিদ হোসাইন বলেন, কচুয়ায় সাপে কাটা রোগীর জন্য অ্যান্টিভেনোম পর্যাপ্ত না। তবে চাহিদা অনুযায়ী তালিকা পাঠানো হয়েছে খুব শীগ্রই তা পূরণ হতে পারে।

তবে জেলা সিভিল সার্জন ডা. নূরে আলম দীন বলেন, সারা বছরই সাপে কামড়ায়, কিন্তু এই বর্ষার সৃজনটাতে এটার উপদ্রব বেড়ে যায়। সাপের কামড়ে প্রতি বছর অনেক মানুষ মারা যায়। সরকার প্রতিটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনোম মজুদ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো থেকে চাহিদা পাঠানো হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চাঁদপুরে গেল চার মাসে সাপের ছোবলে হাজীগঞ্জ ও কচুয়া উপজেলায় দুই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। বিষাক্ত সাপের ছোবলে প্রতিটি রোগীকে ১০ টি অ্যান্টিভেনোম প্রয়োগ করতে হয়। বেসরকারিভাবে অ্যান্টিভেনোমের দাম বেশি হওয়ায় তাৎক্ষণিক সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে থাকে। সরকারিভাবে এই অ্যান্টিভেনোম সরবরাহের প্রত্যাশা মানুষের।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *