
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী প্রধান আইয়াল জমির ঘোষণা দিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ শেষে এখন গাজা অভিযানকেই অগ্রাধিকার দেবে তাঁর বাহিনী। সে কথামতই কাজ করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
শুক্রবার গাজায় তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত ছিল। দিনশেষে গাজার ৬২ বাসিন্দা নিহত হয়েছে বলে জানা যায়। যাদের মধ্যে ১০ জন ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এএফপি ও বাসস এ তথ্য দিয়েছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল জানান, শুক্রবার গাজা জুড়ে ইসরায়েলের বিমান হামলা ও গুলিতে ৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
বাসসাল জানান, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর পরিচালিত একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে ছয়জন এবং কেন্দ্রীয় গাজার আরেক স্থানে এক ব্যক্তি নিহত হন। তিনি আরও বলেন, গাজা সিটির দক্ষিণ-পশ্চিমে ত্রাণের জন্য অপেক্ষাকালে আরেকটি হামলায় তিনজন নিহত হন।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মে মাসের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত ৫০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মেডিকেল দাতব্য সংস্থা ‘ডক্টরস উইদআউট বর্ডারস’ (এমএসএফ) শুক্রবার জিএইচএফ-এর ত্রাণ কার্যক্রমকে মানবিক সাহায্যের ছদ্মবেশে হত্যাযজ্ঞ বলে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে।
এমএসএফ জানিয়েছে, গত জুনে যখন জিএইচএফ গাজার কেন্দ্রীয় নেতসারিম করিডোরে একটি বিতরণ কেন্দ্র চালু করে, তখন কাছের দেইর আল-বালাহ এলাকায় এমএসএফ পরিচালিত ফিল্ড হাসপাতালে আগের সপ্তাহের তুলনায় গুলিবিদ্ধ রোগীর সংখ্যা ১৯০ শতাংশ বেড়ে যায়।
গাজায় এমএসএফ-এর জরুরি সমন্বয়ক আইতোর জাবালগোগিয়াসকোয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বর্তমানে বিতরণকেন্দ্রগুলো যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তাতে যদি কেউ আগেভাগে গিয়ে চেকপয়েন্টের কাছে পৌঁছে যায়, তাহলে তাকে গুলি করা হয়। যদি নির্ধারিত সময়ে পৌঁছেও ভিড় বেশি হয় এবং কেউ বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যায়, তাহলেও গুলি করা হয়। যদি কেউ দেরি করে পৌঁছে, তবে বলা হয় সে নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করেছে- তাকেও গুলি করা হয়।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইল আক্রমণ থেকে এই গাজা যুদ্ধ শুরু হয়, যেখানে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। ইসরাইলের পাল্টা সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৬ হাজার ৩৩১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যেও বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।