রাবিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকর্মীকে লাঞ্ছনার অভিযোগ

Spread the love

নিউজ ডেস্ক, জনতারকথা।

সান্ধ্যকালীন কোর্সের বিরোধিতা করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের এক শিক্ষককে সাধারণসভা চলাকালে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে একই অনুষদের আরেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বুধবার (২ জুলাই) চারুকলা অনুষদের অধিকর্তার কক্ষে অনুষদের ২৯তম সাধারণসভা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।

ভুক্তভোগী শিক্ষক হলেন চারুকলা অনুষদের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সোবাহান। অভিযুক্ত শিক্ষক একই অনুষদের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুস সালাম।

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষক উল্লেখ করেছেন, ‘২ জুলাই চারুকলা অনুষদের অধিকর্তার কক্ষে অনুষদের ২৯তম সাধারণসভা চলাকালে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর বিষয়ে অ্যাজেন্ডা উপস্থাপিত হলে আমি মতামত প্রদান করি। প্রাথমিকভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে, সান্ধ্যকোর্স চালু হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের স্বকীয়তা নষ্ট হতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এটি নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া এটা আমাদের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য এক আত্মঘাতী বিষয়ও বটে।

এ সময় আমি বলি, সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সসহ ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট প্রোগ্রামের বিষয়গুলো বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় চালু হয়েছিল। ফলে অনুষদের অধিকর্তাকে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বাইরে গিয়ে এ সিদ্ধান্ত না নেওয়ার প্রস্তাব দিই। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিষয়টি বলায় তাৎক্ষণিক মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোস্তফা শরীফ আনোয়ার আমার সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলায় তাঁর সঙ্গে আমার উচ্চবাচ্য হয়।’

লাঞ্ছনার ও হেনস্তার বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, ‘সে সময় মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুস সালাম আমার মতামতকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘একে বের করে দেওয়া হোক।’ যা সম্পূর্ণ তাঁর এখতিয়ারের বাইরে। এ সময় আমি দু-পা সামনে এগিয়ে গিয়ে বলি, ‘তুমি আমাকে বের করে দিতে বলার কে?’ সে মুহূর্তে আব্দুস সালাম উত্তেজিত হয়ে আমার কোমর জাপটে ধরে ওপরে তোলে এবং বলপ্রয়োগ করে চেয়ারে বসিয়ে দেয়। একজন সহকর্মীর দ্বারা মিটিং চলাকালে সব শিক্ষকের সামনে এমন লাঞ্ছনার ঘটনায় আমি হতবাক হয়ে যাই। একজন শিক্ষকের দ্বারা এমন শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধির চূড়ান্ত লঙ্ঘন।’

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘গতকাল সভায় সবাই সবার মতামত দেওয়ার সময় দুজন শিক্ষকের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে সহকারী প্রক্টর ওই শিক্ষককে কোমর ধরে তাঁর চেয়ারে বসান, শিক্ষক হিসেবে এমন আচরণ মানায় না।’

অভিযুক্ত শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর আব্দুস সালাম বলেন, ‘গতকাল অনুষদের মিটিংয়ের মাঝখানে এসে তিনি চেঁচামেচি শুরু করেন। তিনি আগেও এমন করেছেন। এটা তাঁর মানসিক সমস্যা। তিনি হঠাৎ চেঁচামেচি করে চেয়ার থেকে উঠে গেলে তাঁকে আমি চেয়ারে বসিয়ে দেই।’

চারুকলা অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘এখনো আমি এ বিষয় কোনো অভিযোগপত্র পাইনি। যেহেতু ঘটনা ঘটেছে, আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *