নববর্ষ ঘিরে ঢাকাকে ২১ ভাগ করে নিরাপত্তা: ডিএমপি কমিশনার

Spread the love

বাংলা নববর্ষ বরণে রাজধানীর রমনা বটমূল, চারুকলাসহবিভিন্ন অনুষ্ঠান ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে পর্যাপ্ত সংখ্যক ইউনিফর্ম ও সাদা পেশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাদ আলী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রাটি সকাল ৯টায় শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, ওই শোভাযাত্রার নির্ধারিত রাস্তা ঢেকে দেওয়া হবে ‘নিরাপত্তার চাদরে’।

নববর্ষের আগের দিন রোববার রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখতে এসে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, “অনুষ্ঠানগুলো কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরীকে ২১টি সেক্টরে ভাগ করে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক ইউনিফর্ম ও সাদা পেশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।”

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেছেন, অনুষ্ঠানস্থলে এবারো কোনো ধরনের মুখোশ পরা যাবে না, বহন করা যাবে না ব্যাগ; এছাড়া ধারাল বস্তু এবং দাহ্য পদার্থ সঙ্গে না রাখারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

ফানুশ উড়ানো, আতশবাজি ফুটানোতেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেছেন, শব্দ দূষণ হয় এরকম কোন বাঁশি বাজানো যাবে না।

এছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করারও আহ্বান রেখেছেন সাজ্জাদ আলী।
‘আনন্দ শোভাযাত্রাটি’ চারুকলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়-টিএসসি-শহীদ মিনার-দোয়েল চত্বর-বাংলা একাডেমি-টিএসসি হয়ে ফের চারুকলায় গিয়ে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।

শোভাযাত্রা শুরু হলে তাতে পাশ থেকে ‘প্রবেশ করা যাবে না’ বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

রমনা বটমূল ছাড়াও প্রতিবারের মত এবারও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় সংসদভবন এলাকা, রবীন্দ্র সরোবর ও হাতিরঝিল এলাকায় বর্ষবরণের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন রাখা হয়েছে।

এসব স্থানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানস্থলগুলো ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করা হবে। রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে মোট ২১টি স্থানে ব্যারিকেড ব্যবস্থা থাকবে।”

প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশ গেইটে ‘আর্চওয়ে ও হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর’ দিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছেন সাজ্জাদ আলী।

তিনি বলেছেন, অনুষ্ঠানস্থল ও শোভাযাত্রার রাস্তা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা, স্টিল ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা ও ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিকভাবে নজরদারি করা হবে।

এছাড়া ইভটিজিং, ছিনতাই রোধে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকছে।

সাজ্জাদ আলী বলেন, “গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও সাইবার পেট্রোলিংসহ নববর্ষকেন্দ্রিক অপপ্রচার রোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কোনো অপতৎপরতা মনিটরিং করা হবে। অনুষ্ঠানস্থলে হকার প্রবেশ করে যাতে অনাকাঙ্খিত কোনো পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সেজন্য বিশেষ টিম কাজ করবে।”

এছাড়া বর্ষবরণ অনুষ্ঠানস্থলে ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স, মেডিকেল টিম, নৌ পুলিশের ডুবুরি দল ও সিটি করপোরেশনের মোবাইল টয়লেট থাকছে। পর্যটকদের জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ সেবা কেন্দ্র থাকবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।

পুলিশ কমিশনার সাজ্জাদ আলী বলেছেন, রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠান সকাল সোয়া ছয়টায় শুরু হয়ে সকাল ৮টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত চলবে। ছায়ানটের শিল্পী কলাকুশলী, সাংবাদিক, পুরুষ ও নারী দর্শনার্থীরা পৃথক পৃথক গেইট দিয়ে প্রবেশ করবেন এবং বের হবেন। সবাইকে তল্লাশির আওতায় আসতে হবে জানিয়ে, এই অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ ও বের হওয়ার কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।

>> রমনার অনুষ্ঠানে কেবল ৩টি গেইট দিয়ে প্রবেশ করা যাবে। সেগুলো হল-অরুনাদয় গেইট, রমনা রেস্তোরাঁ গেইট ও শিশু পার্কের বিপরীতে অস্তাচল গেইট।

>> রমনার অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের হওয়ার জন্য উত্তরায়ন গেইট ও বৈশাখী গেইট ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া শ্যামোলিমা গেইট, স্টার গেইট এবং বৈশাখী ও অস্তাচল গেইটের মাঝামাঝি নতুন গেইট প্রবেশ ও বের হওয়া, উভয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে। হর্টিকালচার গেইট বন্ধ থাকবে।

>> সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য তিনটি গেইট- বাংলা একডেমির বিপরীতে নতুন গেইট, আইইবি গেইট ও ছবির হাট গেইট দিয়ে কেবল প্রবেশ করা যাবে এবং বের হওয়ার জন্য তিনটি গেইট-শিখা চিরন্তন গেইট, রমনা কালী মন্দির গেইট ও তিন নেতার মাজার গেইট ব্যবহার করা যাবে।

>> টিএসএসির বিপরীত গেইট বন্ধ থাকবে। রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ গেইট দিয়ে প্রবেশ করা যাবে। বিকাল ৫টার পর সকল গেট বের হওয়ার গেট হিসেবে ব্যবহার হবে।

সাজ্জাদ আলী বলেছেন বর্ষবরণ উদযাপনের দিন বেশ কিছু সড়কে যান যানচলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে ডাইভারসন ব্যবস্থা থাকবে। নির্ধারিত স্থানে যানবাহন পার্কিং করতে হবে।

যে কোনো প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, ম্যাসেজ টু কমিশনার (০১৩২০-১০১০১০, ০১৩২০-০২০২০২) এই নাম্বারে ম্যাসেজ এবং পুলিশ কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *