প্রোভিসি ও কুয়েট ভিসিকে অব্যাহতি

Spread the love

খুলনা বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এস কে শরিফুল আলমকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শুক্রবার রাতে তাদের অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ উদ-দৌলা-খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে প্রজ্ঞাপন জারির তথ্য দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “রাত পৌনে ১২টার দিকে তাদের অব্যাহতির প্রজ্ঞাপন হাতে পেয়েছি।”

প্রজ্ঞাপনে তাদের অব্যাহতি দিয়ে নিজ নিজ বিভাগের দায়িত্বে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এবং অধ্যাপক এস কে শরিফুল আলম কুয়েটের ইলেক্ট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

আগের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় রোববার উপাচার্যকে পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা না আসায় অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা।

এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে কুয়েট ক্যাম্পাসে পৌঁছান। তবে দীর্ঘ সময় বুঝিয়েও তিনি অনশন ভাঙাতে পারেননি।

কীভাবে এই আন্দোলন ছয় দফা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে পরিণত হল, সে বিষয়টি শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টাকে বলেন। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।

এরপর বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পাশাপাশি সব হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে শুরু হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত আসে।

আমরণ অনশন কর্মসূচির তৃতীয় দিনে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন অনেক শিক্ষার্থী। তবে উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন তারা।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠন করা কমিটির তিন সদস্য কুয়েট ক্যাম্পাসে যান।

বুধবার রাত ১টায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান কুয়েট ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।

তার আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি বার্তা অনশনরত শিক্ষার্থীদের পড়ে শোনান অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে ‘সমস্যা নিরসন ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে’ কুয়েটের উপাচার্য ও উপ উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

ওই ঘোষণায় ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার এলাকায় উল্লাসে ফেটে পড়েন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে তারা আনন্দ মিছিল বের করেন। পরে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *