পাকিস্তানে ধরা পড়ল ভারত প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী, মিলল ড্রোন-বিস্ফোরক

Spread the love

পহেলগাঁও হামলার পর ভারতের অভিযোগের জবাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী মঙ্গলবার এক গুরুত্বপূর্ণ প্রেস ব্রিফিংয়ে দাবি করেছে, তারা ভারতীয় সরকারের পৃষ্টপোষকতায় দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসের অকাট্য প্রমাণ হাতে পেয়েছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

বেলুচিস্তানসহ পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারত পরিচালিত সন্ত্রাসী তৎপরতার বিষয়টি তুলে ধরে জানানো হয়, সম্প্রতি এক ভারত-প্রশিক্ষিত পাকিস্তানি নাগরিককে আটক করা হয়েছে, যার কাছ থেকে একটি ভারতীয় ড্রোন ও ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) উদ্ধার হয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, ২৫ এপ্রিল ঝিলাম বাস স্ট্যান্ডের কাছ থেকে ‘আব্দুল মজিদ’ নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়, যিনি ভারতীয় গোয়েন্দাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তার কাছ থেকে একটি আইইডি, দুটি মোবাইল ফোন এবং ৭০ হাজার রুপি উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তী অনুসন্ধানে তার বাড়ি থেকে আরও ১০ লাখ রুপি এবং একটি ভারতীয় ড্রোন জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, এই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগকারী ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর জুনিয়র কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবেদার সুখবিন্দার, যিনি তাকে নির্দিষ্ট স্থানে আইইডি সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী বলেন, উদ্ধারকৃত উপকরণসমূহের ফরেনসিক বিশ্লেষণে এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা যে কোনো নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থা যাচাই করতে পারে। এটি ভারতের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসবাদের একটি ক্ষুদ্র উদাহরণ মাত্র।

তিনি বলেন, পহেলগাঁও হামলার পর ভারত কোনো তদন্ত ছাড়াই একতরফাভাবে পাকিস্তানকে দোষারোপ করতে শুরু করে, যার পেছনে অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতা ও আসন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে দৃষ্টি সরানোর উদ্দেশ্য ছিল।

উল্লেখ্য, ভারতের কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁও গত সপ্তাহে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এর পরপরই প্রমাণ ছাড়াই ভারত পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিন্দুর পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয় এবং আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত পারাপার বন্ধ করে দেয়। এছাড়া পাকিস্তানে নিযুক্ত প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে এবং ইসলামাবাদে থাকা কূটনৈতিক কর্মীদের সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তান ভারতের বিমান চলাচলের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। ইসলামাবাদে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠকে বলা হয়, সিন্ধু পানি চুক্তি একটি বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় বাস্তবায়িত আন্তর্জাতিক চুক্তি, যার একতরফাভাবে স্থগিত করার কোনো বিধান নেই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পানিই পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষের জন্য জীবনরেখা। এর প্রবাহ রোধের চেষ্টা করলে তা যুদ্ধের ঘোষণার শামিল হবে, যার জবাব দেওয়া হবে জাতীয় শক্তির সব পরিসরে।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *