
কুষ্টিয়া আফিস।
কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের আটিগ্রাম কাটাখালি মোড় থেকে ধাপারিয়া এবং ধাপারিয়া থেকে শাপলাপুর সড়কের চলমান উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট এমন অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের মতে, এই সড়কটি বহুদিন ধরেই চলাচলের অনুপযোগী ছিল। অবশেষে কাজ শুরু হলেও নির্মাণকাজে মান বজায় না রাখায় নতুন করে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন তারা।
এলাকাবাসীর দাবি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সড়কের জন্য যে ইট আনা হয়েছে, সেগুলো রঙ ও গঠনগতভাবে অত্যন্ত দুর্বল এবং হাতে ভাঙলে টুকরো হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও রাস্তার দুই ধারে প্রয়োজনীয়ভাবে পাইলিং না করেই ইট বিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা বর্ষার সময় সহজেই সরে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো, রাস্তার নিচে প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে প্লাস্টিকের পাইপ। সাধারণত রাস্তার দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে আরসিসি বা সিমেন্ট-নির্মিত ড্রেন অথবা উন্নতমানের পাইপ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পাইপে সহজেই ফাটল ধরতে পারে এবং তা মাটি ধসে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
এছাড়া সড়কটির মাঝ বরাবর যেসব বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে, সেগুলো অপসারণ না করেই রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। ফলে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটবে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যাবে, এমনটাই মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।
এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, এই রাস্তাটি আমাদের আটিগ্রাম থেকে শাপলাপুর পর্যন্ত যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা। বহুদিন পরে কাজ শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু যেভাবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে বছর পার না হতেই আবার মেরামতের প্রয়োজন পড়বে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকেও বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তাঁরা জানান, উপজেলা প্রকৌশল দফতরকে অবহিত করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
এই বিষয়ে মিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে নিম্নমানের ইট, অপর্যাপ্ত পাইলিং ও রাস্তার মাঝে বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণের বিষয়গুলো সমাধান না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। কিন্তু কিছু অসাধু ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর গাফিলতির কারণে এসব উন্নয়ন টেকসই হচ্ছে না। তাই দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।