
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, জনতারকথা।
বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে ২০২৪ সালের এই দিনে ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে। রাহুমুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতা প্রিয়, গণতন্ত্র প্রিয় জনগণের জন্য দিনটি আনন্দের। দিনটি বিজয়ের।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ফেসবুক লাইভে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ৫ আগস্ট। আজ থেকে ঠিক একবছর আগে ২০২৪ সালের এই দিনে ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে। রাহুমুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতা প্রিয় গণতন্ত্র প্রিয় জনগণের জন্য দিনটি আনন্দের। দিনটি বিজয়ের। রাহুমুক্ত বাংলাদেশের এই দিনটিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাঁবেদারমুক্ত বাংলাদেশের জনগণ প্রতিবছর এ দিনটিকে স্বাধীনভাবে সানন্দে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে উপভোগ করবে। স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার চর্চার নতুন অঙ্গীকারে উদ্বুদ্ধ হবে।
তিনি বলেন, একুশ শতকের এই বাংলাদেশে পলাতক স্বৈরাচার এক বিভীষিকার রাজত্ব কায়েম করেছিল। গুম-খুন, অপহরণ, হামলা-মামলা, নির্যাতন, নিপীড়নকে সাধারণ এবং স্বাভাবিক ঘটনায় রূপান্তর করেছিল। এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দেড় দশকের বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলনের সময় বিএনপিসহ ভিন্ন দল ও মতের গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির লাখো কোটি নেতাকর্মীর জন্য দেশকে নরকে পরিণত করে রাখা হয়েছিল। শত শত মিথ্যা মামলার কারণে ভিন্ন দল এবং মতের লাখ লাখ নেতাকর্মী সমর্থককে ঘরবাড়ি ছাড়া করে দেওয়া হয়েছিল। অনেকের পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হয়ে গেছে।
গণতন্ত্রকামী মানুষের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে পলাতক স্বৈরাচারের নির্দেশে দেশে শত শত গোপন বন্দিখানা ‘আয়নাঘর’ বানানো হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, আয়নাঘরের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে জলজ্যান্ত মানুষকে দিনের পর দিন রাতের পর রাত বছরের পর বছর আটকে রাখা হতো। অনেককে চিরতরে গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির সাবেক এমপি ইলিয়াস আলী কিংবা কমিশনার চৌধুরী আলমের আজও খোঁজ মেলেনি।
তারেক রহমান বলেন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশনসহ দেশের সব সাংবিধানিক বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছিল। সংবিধান উপেক্ষা করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছিল। দেশকে চিরতরে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিনষ্ট করার সব আনুষ্ঠানিকতা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। বই-খাতা কলমের পরিবর্তে রাজনীতির নামে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল লগি-বৈঠা-হাতুড়ি-চাপাতি। বিপর্যস্ত করে দেওয়া হয়েছিল দেশের অর্থনীতি। ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে ফেলা হয়েছিল। দেশ থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অন্যায়-অনিয়ম-অনাচার-দুরাচার-লুটপাট দৈনন্দিন চিত্র হয়ে উঠেছিল। দেশে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল ব্যক্তিতন্ত্র। তবে ফ্যাসিস্টের শেষ রক্ষা হয়নি। দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে রাজপথে নেমে এসেছিল। আর তাতেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় ফ্যাসিস্ট।