
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, জনতারকথা, চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে বিএনপির একাংশের বিজয় র্যালিতে ব্যবহার করা হয়েছে সরকারি একটি অ্যাম্বুলেন্স। দলটির উত্তর জেলা কমিটির এক সাবেক নেতা এই অ্যাম্বুলেন্সটি শোডাউনের কাজে ব্যবহার করায় শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা।
৫ আগস্ট দুপুরে ফটিকছড়ি পৌরসভার মালিকানাধীন অ্যাম্বুলেন্সটি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সরওয়ার আলমগীরের নেতৃত্বে আয়োজিত বিজয় র্যালিতে অংশ নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অ্যাম্বুলেন্সটি সাইরেন বাজিয়ে পুরো ফটিকছড়ি সদর এলাকা ঘুরে বেড়ায়, যদিও তাতে কোনো রোগী ছিল না। বরং তাতে ছিলেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী।
এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই মনে করছেন, সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ সরকারি সেবার সরঞ্জাম রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যবহারে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
ফটিকছড়ি পৌরসভার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের অনুদানে পাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি রোগী পরিবহনের জন্য বরাদ্দ। কোনো রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারের অনুমতি নেই। অথচ এটি দলীয় কর্মসূচিতে ব্যবহার হয়েছে, যা অনৈতিক ও নিয়মবহির্ভূত।
পৌর এলাকার বাসিন্দা আলী আকবর বলেন, এই অ্যাম্বুলেন্স তো রোগীদের জন্য। অথচ এখন তা রাজনৈতিক প্রচারণায় ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
তবে এই বিষয়ে ভিন্ন মত দিয়েছেন বিএনপির নেতারা। ফটিকছড়ি পৌরসভার বাসিন্দা ও রাঙ্গামটিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমরা অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া নিয়ে শোডাউনে ব্যবহার করেছি। এটি নিয়ে অহেতুক সমালোচনা হচ্ছে।
তবে কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আজিমুল্লাহ বাহারের পক্ষ থেকে। তিনি বলেন, সরকারি সম্পত্তি ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। যিনি এটি করেছেন, তিনি রাজনৈতিকভাবে অপরিপক্ব ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। এসব কাজ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সরওয়ার আলমগীর বলেন, শোডাউনে আহত কর্মীদের পরিবহনের প্রয়োজনে আমরা অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া করি। এটি সরকারি না বেসরকারি, তা আমার জানা ছিল না।
ফটিকছড়ি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের বিষয়টি আগে জানতাম না। অভিযোগের তদন্ত করা হবে। সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।