
জনতারকথা ডেস্ক:
সিগারেটে কার্যকর করারোপের সুফল প্রমাণিত উল্লেখ করে গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয় এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার তাগিদ দিয়েছে। সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে প্রাক-বাজেট সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার পক্ষ থেকে এই তাগিদ দেওয়া হয়।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপ বিষয়ে তামাক-বিরোধী নাগরিক সংগঠনগুলোর প্রস্তাবনা প্রতিফলন দেখা না গেলেও, অর্থবছরের মাঝামাঝি এসে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিলো এবং সকল স্তরের সিগারেটের ওপর একই বর্ধিত হারে (৬৭ শতাংশ হারে) সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিলো। দেরিতে হলেও নাগরিক সংগঠনের প্রস্তাবগুলো কর-নীতিতে প্রতিফলিত করায়- এক দিকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ইতিবাচক অগ্রগিত হয়েছে, অন্যদিকে সরকারের বাড়তি রাজস্ব পাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী বলেন, ‘নাগরিক সংগঠনগুলোর প্রস্তাবনা অনুসারে সিগারেটের দাম বাড়ানো গেলে সিগারেটের ওপর বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক হার (৬৭ শতাংশ) অপরিবর্তিত রেখেই আগামী অর্থবছরে চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব। এছাড়া বর্তমানে যে চার স্তরের সিগারেট বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে, তার মধ্যে তুলনামূলক সস্তা নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটকে একটি একিভূত স্তরে নিয়ে এসে- ওই নতুন স্তরের একেকটি সিগারেটের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৯ টাকা করা গেলে কিশোর-তরুণদের সিগারেট ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা সম্ভব।’
সিগারেটের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাজস্ব আহরণের চেয়ে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল বলেন, ‘তামাকপণ্য বিক্রি থেকে যে রাজস্ব আসে, তা তামাকজনিত স্বাস্থ্য ব্যয়ের মাত্র ৭৫ শতাংশ।
কার্যকর করারোপের মাধ্যমে সিগারেট বিক্রি থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ১১ থেকে ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব বলে জানান বিআইআইএসএস-এর গবেষণা পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির। তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সিগারেটের দাম না বাড়ানোয় বিগত অর্থবছরগুলোতে সিগারেট বিক্রির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বেড়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টাস ফোরামের সভাপতি এম এম রাশেদ রাব্বি।। সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগি ড. মাহাবুব মাসুদ।