প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে চামড়ার স্তুপ, তীব্র দুর্গন্ধে অতিষ্ট এলাকাবাসী

Spread the love

ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের আড়াইসিধা মধ্যনগর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে চামড়ার স্তুপ ফেলেছেন এক চামড়া ব্যবসায়ী। এতে চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র দুর্গন্ধ, যা সহ্য করতে না পেরে স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। চামড়াগুলোর তীব্র বাজে গন্ধে পথচারীদের নাক-মুখ ঢেকে চলাচল করতে হচ্ছে। স্বাভাবিক চলাফেরা হয়ে পড়েছে কষ্টকর। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। বিদ্যালয় বন্ধের সময় পার করে খোলা হলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়তে হবে ভোগান্তিতে। পরিবেশ ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দ্রুত চামড়ার স্তুপ অপসারণ এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসনের কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।

স্থানীয়রা জানান, আশুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের চলাচলকারীদের আশুগঞ্জ বাজার ও উপজেলা প্রশাসনের আসার একমাত্র রাস্তা এটি। এই রাস্তার পাশেই আড়াইসিধা মধ্যনগরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মুরাদ মিয়া নামে এক ব্যক্তি বিশাল বিশাল স্তুপ করে পুরো মাঠে কুরবানির পশুর চামড়া রেখেছেন। ঈদ পরবর্তী সময়ে পশুর কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার জন্য মাঠ এবং ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থানের পাশেই চামড়া স্তূপ করে রেখেছেন। কয়েকদিন ধরে এসব চামড়া থেকে দুর্গন্ধে আশপাশের মানুষ পথ চলা দায় হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে মসজিদ ও খানকায় যাতায়াতকারী নামাজী ও ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্য পরিবেশটি হয়ে উঠেছে চরম অস্বাস্থ্যকর। পাশাপাশি বিদ্যালয় বন্ধের সময় পার করে খোলা হলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়তে হবে ভোগান্তিতে।
চলাচলকারী একজন স্থানীয় বাসিন্দা মাইনুদ্দিন মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্কুল ও একটি মসজিদের সামনে এভাবে চামড়া রাখাটা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। এলাকাবাসীর কোনো মতামত বা অনুমতি না নিয়ে এভাবে কাজ করা মোটেই উচিত হয়নি।

আরেক পথচারী মোবারক হোসেন বলেন, কয়েকটি ইউনিয়নের লোকজন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। পাশাপাশি একটি স্কুল ও মসজিদের সামনে এভাবে চামড়া রাখা দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। এসব দ্রুত অপসারন করে স্কুলমাঠ পরিস্কার করা জরুরী। বাচ্চারা স্কুলে আসলে এসবের গন্ধে বসতে পারবে না।
শাহাদাত নামে একজন পথচারী বলেন, খানকার ও মসজিদের পাশে এমন দুর্গন্ধ ছড়ানো খুবই অশোভন ও অমানবিক। নামাজ পড়তে যাওয়া অনেকে মুসুল্লী সমস্যার মুখে পড়ছেন।

চামড়া ব্যবসায়ী মো. মুরাদ মিয়া বলেন, ঢাকায় চামড়া প্রবেশের ১০ দিন সময়সীমা বেধে দেয়ার কারনে আমরা এখানে রেখেছি। আজ রাতেই চামড়াগুলো আমরা সড়িয়ে নিব। স্কুল মাঠে কেন চামড়া রেখেছেন এই প্রশ্ন করা হলে তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এই বিষয়ে আড়াইসিধা মধ্য নগরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও আড়াইসিধা খানকায়ে রহমানিয়া দরবার শরীফের পীর সাহেব মাওলানা মাসুম মাহমুদ বলেন, দুই তিনদিনের কথা বলে তারা এখানে কয়েকটি চামড়া রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন যে অবস্থা দেখছি তাতে করে চামড়া ব্যবসায়ীকে ডেকে এনে দ্রুত তা সড়িয়ে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। আজ রাতেই তারা নিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

এই বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, ১০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়ার কারনে জেলার বিভিন্ন যায়গায় চামড়া রাখছে ব্যবসায়ীরা। তবে স্কুল মাঠে রাখাটা ঠিক হয়নি। এই বিষয়ে তাদের সাথে কথা বলবেন বলেও জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। পরে তাকে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলে তিনি এই বিষয়ে কিছু জানেন না এবং খবর নিয়ে দেখবেন বলে জানান।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *