কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নদীতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমিসহ নানা স্থাপনা

Spread the love

কুষ্টিয়া , করেসপন্ডেন্ট।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারও তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম দিন পার করছেন নদীপাড়ের চার গ্রামের বাসিন্দারা।

সরেজমিন দেখা যায়, পদ্মা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় গত ১০ দিন ধরে বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল, টিকটিকিপাড়া, মসলেমপুর ও মুন্সিপাড়াসহ আশপাশের প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকায় এ ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি; হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন স্থাপনা ও নদী প্রতিরক্ষা বাঁধও। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে চারগ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানি, অতিবৃষ্টি আর নদীর প্রবল স্রোতের কারণে পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে তারা। আর ভাঙনে প্রতিদিনই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। বিশেষ করে ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া, ১২ মাইল, টিকটিকিপাড়া ও মসলেমপুরসহ আশপাশের প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

এতে হুমকির মুখে পড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বসতভিটা, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ পদ্মা নদী প্রতিরক্ষা বেড়িবাঁধ। এমন ভাঙনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদীপাড় এলাকার মানুষ। তাই অবিলম্বে ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি নদীর পাড়ে মানববন্ধনও করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। নতুন করে আর কোনো আশ্বাস নয়, দ্রুত ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে পদক্ষেপ নিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে দাবি নদীপাড়ের বাসিন্দাদের।

স্থানীয় বাসিন্দা আলাউদ্দিন বলেন, পদ্মা নদীতেই কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। গত ১০ দিন থেকে পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। এই ভাঙনেও একরের পর একর কৃষিজমি বিলীন হয়েছে। বাহিরচর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া, ১২ মাইল, টিকটিকিপাড়া ও মসলেমপুরের এই ৪ গ্রামের প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকায় এই ভাঙন শুরু হয়েছে। সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাঙন স্থান থেকে পদ্মা নদী রক্ষা বেড়িবাঁধের দৈর্ঘ্য মাত্র ৪০ মিটার। ইতিমধ্যে ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনোয়ার হোসাইন ও কুষ্টিয়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীও আমাদের কাছে একটি আবেদন দিয়েছে। সেটি পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর পাঠানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, দ্রুতই তারা ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বস্ত করেছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান বলেন, স্থানগুলো চিহ্নিত করেছি। তালবাড়ীয়া থেকে নয় কিলোমিটার ভাঙন স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে এক হাজার ৪৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প চলমান রয়েছে। বাহিরচর ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া ও টিকটিকিপাড়া এবং এর আশপাশের এলাকায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকা রক্ষায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এরই মধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই এসব এলাকায় ভাঙনরোধে দ্রুতই কাজ শুরু হবে। কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক মো. হামিদুর রহমান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে রুলস অ্যান্ড প্রসিকিউর মেনে দ্রুতই আমরা কাজ শুরু করব।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *