
ঠাকুরগাঁও, করেসপন্ডেন্ট।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের নবনির্মিত পাঁচতলা ছাত্রী নিবাসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে ছাত্রীরা থাকতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ১৫২ জন ছাত্রীর ধারণক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে সেখানে মাত্র ৭ জন ছাত্রী বসবাস করছেন।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, পীরগঞ্জ সরকারি কলেজে বর্তমানে ৯টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছয় হাজারের বেশি, যাদের প্রায় অর্ধেকই ছাত্রী। এদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন উপজেলা এবং জেলা থেকে এসে এখানে পড়াশোনা করেন। দূর থেকে আসা ছাত্রীদের আবাসন সুবিধার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি ছাত্রাবাস ও একটি ছাত্রী নিবাস নির্মাণ করে। ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করলেও নিরাপত্তার অভাবে ছাত্রীরা ছাত্রী নিবাসে থাকতে চাইছে না।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুল হুদা জানান, কয়েক মাস আগে একজন শিক্ষিকার তত্ত্বাবধানে কয়েকজন ছাত্রীকে ছাত্রী নিবাসে ওঠানো হয়েছিল। তবে, এর কিছুদিন পরেই ছাত্রী নিবাসে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটায় ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। বর্তমানে ছাত্রীরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার শর্তে সেখানে অবস্থান করলেও নতুন করে কেউ যোগ দিতে চাইছে না।
ছাত্রী নিবাসে থাকা ছাত্রীরা জানান, এখানে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এবং পড়াশোনার পরিবেশও ভালো। তবে, চুরির ঘটনা, বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্ধকার হয়ে যাওয়া, পর্যাপ্ত ছাত্রী না থাকায় ডাইনিং ব্যবস্থা চালু না হওয়া এবং ইন্টারনেট সংযোগের অভাবের কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে। তারা মনে করেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে এবং অন্যান্য সমস্যাগুলোর সমাধান হলে ছাত্রী সংখ্যা বাড়বে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, পাঁচতলা ছাত্রী নিবাসটিতে প্রতিটি ছাত্রীর জন্য রিডিং টেবিল, ল্যাম্প ও সংযুক্ত বাথরুমসহ আধুনিক সুবিধা রয়েছে। এখানে মাসে মাত্র ৫০০ টাকায় থাকার সুযোগ থাকলেও নিরাপত্তার কারণে ছাত্রীরা আগ্রহী হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে গত জুন মাসের আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে এবং সেখানে দুইজন নারী আনসার নিয়োগ ও পুলিশের টহল জোরদার করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বদরুল হুদা জানান, ছাত্রীদের জন্য নিরাপদ ও আধুনিক আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কলেজ কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা জোরদারসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে কাজ করছে।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, সরকারি কলেজের ছাত্রী নিবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে এবং চুরির সাথে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।