‘যুদ্ধকক্ষ থেকে নিজেই পাল্টা হামলায় নেতৃত্ব দেন খামেনি’

Spread the love

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।

ইরান-ইসরাইল সাম্প্রতিক সংঘাতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি যুদ্ধকক্ষ থেকে পাল্টা হামলার পুরো পরিকল্পনা ও পরিচালনার নেতৃত্ব দিয়েছেন। ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের কালিবাফ এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, খামেনির নির্দেশে পরিচালিত ‘সুনির্দিষ্ট ও ফলপ্রসূ’ হামলার কারণেই ইসরায়েল ও ওয়াশিংটন মাত্র ১২ দিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছে।

কালিবাফ জানান, হত্যাকাণ্ডের তিন-চার ঘণ্টার মধ্যেই খামেনি নতুন কমান্ডার নিয়োগ দেন, তাদের ব্যক্তিগতভাবে তলব করেন, ব্রিফ করেন, নির্দেশনা দেন এবং সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠান। তিনি ব্যাখ্যা করেন, ১৯৮০-এর দশকে সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ইরাক যখন দক্ষিণ ইরানে হামলা চালিয়েছিল, তখন খামেনি ঠিক একই ভূমিকা পালন করেছিলেন।

ইসরায়েলের বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন আয়াতুল্লাহ খামেনি। একটি ভিডিও বার্তায় তিনি ইরানের জনগণকে বলেন, ইসরায়েলকে তাদের অপরাধের জন্য ‘মূল্য দিতে হবে’ এবং এ জন্য তারা ‘দুর্দশাগ্রস্ত’ হবে।

যুদ্ধবিরতির প্রেক্ষাপট নিয়ে ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক আগ্রাসন বন্ধ হয়েছে মূলত তাদের ব্যর্থতার কারণে, কোনো রকম নমনীয় মনোভাবের কারণে নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, স্থল ও আকাশে ইরানের নিয়ন্ত্রণই ছিল ইসরায়েলের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। তার ভাষায়, ‘আমরা ইসরায়েলের সামরিক ও প্রতিরক্ষা কেন্দ্রগুলো অকার্যকর করে দিয়েছি।’

ইরানের স্পিকার জানান, যুদ্ধের শেষদিকে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নির্ভুলতার হার ছিল ৯০ শতাংশেরও বেশি, যার ফলে ইসরায়েলের প্রধান সামরিক ও বিমান প্রতিরক্ষা স্থাপনাগুলো অচল হয়ে পড়ে। কালিবাফ দাবি করেন, ইসরায়েলে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা সম্ভবত ৫০০-এর কম নয়, যদিও দেশটির সরকারি হিসাবে নিহতের সংখ্যা মাত্র ২৯।

তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পরোক্ষ কূটনৈতিক আলোচনা চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তীব্র নিন্দা জানান মোহাম্মদ বাঘের কালিবাফ। তিনি বলেন, ‘কূটনৈতিক আলোচনার মাঝপথে এ ধরনের আগ্রাসন বিশ্বাসঘাতকতা।’

গত ১৩ জুন ভোররাতে ইসরায়েল ইরানে হামলা শুরু করে। হামলার প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন জেনারেল নিহত হন।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ইরান যেন সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা হামলা চালাতে না পারে, সে জন্যই জেনারেলদের ‘নিশানা করে’ হত্যা করা হয়েছে।

তেহরান টাইমস জানায়, ইসরায়েলে হামলার আগে মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, পরোক্ষ পারমাণবিক আলোচনা যত দিন চলবে, তত দিন যুদ্ধের কোনো আশঙ্কা নেই। কিন্তু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সরাসরি হামলা চালায়।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *