
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে ৭৫ হাজার ৯০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢুকেছেন, যাদের মধ্যে বাংলাদেশিরা শীর্ষে রয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্স এই তথ্য জানিয়েছে। ইতালির সরকারি পরিসংখ্যানও বলছে, চলতি বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে দেশটিতে ঢোকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে বাংলাদেশিরাই শীর্ষে।
ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এবং পশ্চিম আফ্রিকান রুট দিয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশী আসার সংখ্যা তীব্রভাবে কমে যাওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রম গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে। সংস্থাটি আরও বলেছে, সার্বিকভাবে আগমন হার কমে এলেও মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুট এখনও ব্যস্ত রয়েছে।
প্রথম ছয় মাসে আসা অভিবাসীদের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশিরা। এরপরই আছেন মিসর ও আফগানিস্তানের নাগরিকরা। পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুট দিয়ে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ২৫ ভাগ কমে ১৯ হাজার ৬০০ হয়েছে। তবে, লিবিয়ার উপকূল থেকে গ্রিক দ্বীপ ক্রিট পর্যন্ত নতুন পথ তৈরি হওয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই রুটে অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়েছে।
সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় রুটে ২৯ হাজার ৩০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী এসেছেন, যা ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। এই বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রার জন্য লিবিয়া এখনও প্রধানতম ট্রানজিট দেশ। দেশটির উপকূল থেকে ২০ হাজার ৮০০ অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছেছেন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি।
পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটেও ২০২৪ সালের প্রথমার্ধের তুলনায় আগমন এ বছর ১৯ ভাগ বেড়েছে। জুনে গত বছরের একই মাসের তুলনায় এই রুট হয়ে দ্বিগুণ অভিবাসী পৌঁছেছেন। এই রুটে আলজেরিয়া এখনও প্রধানতম ট্রানজিট দেশ। ফ্রন্টেক্স মনে করছে, পাচারকারীরা উত্তর আফ্রিকা ছেড়ে এই রুটটিতে দৃষ্টি দিচ্ছে।
বিপরীতে, পশ্চিম আফ্রিকার রুটে অভিবাসী আগমন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশ কমেছে। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে ১১ হাজার ৩০০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে এই রুটে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা বলেছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ভূমধ্যসাগরে ৭৬০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
ইতালির পরিসংখ্যানেও শীর্ষে বাংলাদেশিরা
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তার শাখার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত দেশটিতে আসা অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা ৩১ হাজার ৯৪৮ জন। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা বেশি হলেও ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় অর্ধেক কম।
চলতি বছর ১০ হাজার ৩১১ জন বাংলাদেশি ইতালিতে পৌঁছেছেন, যা মোট আগমনের ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশের পরই রয়েছে ইরিত্রিয়া, ৪ হাজার ৪৬১ জন ইরিত্রিয়ান ইতালিতে পৌঁছেছেন। তৃতীয় অবস্থানে থাকা মিসরের নাগরিকের সংখ্যা ৩ হাজার ৭২৩। এরপরই আছে পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, সুদান, সিরিয়া, সোমালিয়া, গিনি, তিউনিশিয়া, আলজেরিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, মালি ও আইভরিকোস্টের নাম।