
অনলাইন ডেস্ক।
পুরো গাজা দখলের পরিকল্পনা নিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি এ সপ্তাহে মন্ত্রীদের জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনায় মন্ত্রিসভার সমর্থন চাইবেনি তিনি। যদিও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) ভেতর থেকে এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করা হয়েছে।
ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় “উপত্যকা দখল” শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেন, গাজায় সামরিক অভিযান আরও বিস্তারের পরিকল্পনা রয়েছে।
নিউজ সাইট ইনেট একজন সিনিয়র কর্মকর্তার উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘আমরা যাত্রা করেছি। গাজা উপত্যকার পূর্ণ দখলের দিকে এগোচ্ছি আমরা।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, “জিম্মিদের যেসব এলাকায় রাখা হয়েছে, সেখানেও অভিযান চলবে। যদি সেনাপ্রধান একমত না হন, তাহলে তার পদত্যাগ করা উচিত।”
এ মন্তব্যে ইঙ্গিত করা হয়েছে আইডিএফের চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়ায়াল জামিরের প্রতি, যিনি গাজা দখলের বিরোধিতা করছেন।
বর্তমানে আইডিএফ গাজার প্রায় ৭৫ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাকি অংশও সেনাবাহিনীর দখলে যাবে, যার ফলে পুরো গাজা উপত্যকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
এই সিদ্ধান্ত গাজার কয়েক মিলিয়ন বেসামরিক মানুষ ও মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলোর জন্য কী অর্থ বহন করবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
আইডিএফ জানিয়েছে, তারা গাজার পুরোপুরি দখলের বিরুদ্ধে, কারণ হামাসের অবকাঠামো সম্পূর্ণ নির্মূল করতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। এছাড়া এতে জিম্মিদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে, কারণ সেনা সদস্যরা জিম্মিদের অবস্থানের কাছাকাছি পৌঁছালে তাদের হত্যা করা হতে পারে।
সোমবার নেতানিয়াহু বলেন, তিনি মন্ত্রিসভা ডেকে সেনাবাহিনীকে পরবর্তী পদক্ষেপের নির্দেশ দেবেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হয়তো সেনাবাহিনীকে কিছুটা সময় দিতে বলবেন, যাতে জিম্মি মুক্তির আলোচনা আরও এগোতে পারে।
রোববার চ্যানেল-১২ এক প্রতিবেদনে জানায়, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার ভেতর গাজা দখল নিয়ে মতভেদ দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাতজ নাকি এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন।
যারা গাজায় অভিযান সম্প্রসারণের পক্ষে তারা হলেন—কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার, অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ, জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গিভির, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল রোমান গোফম্যান এবং ক্যাবিনেট সচিব যোসি ফুকস।
অন্যদিকে, যারা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির সমঝোতা আলোচনার পক্ষে তারা হলেন—আইডিএফ প্রধান জামির, পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সাআর, শাস পার্টির নেতা আরিয়েহ দেরি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হানেগবি, মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনিয়া, শিন বেতের আলোচক (যিনি “মেম” নামে পরিচিত) এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল নিটজান আলোন, যিনি আইডিএফের পক্ষে জিম্মি ইস্যু দেখছেন।
সূত্র: টাইম অব ইসরায়েল