কুয়েটের উপাচার্য ও উপ উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে: শিক্ষা মন্ত্রণালয়

Spread the love

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ উপাচার্য অধ্যাপক এস কে শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দিতে প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বুধবার মধ্যরাতে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এ তথ্য দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন উপাচার্য ও উপ উপাচার্য এর দায়িত্ব দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে বলে এ বিজ্ঞপ্তিতে তুলে ধরা হয়।

জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।”

একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ দেওয়ার কথা তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকগণের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।”
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরেই আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। গত তিনদিন ধরে অনশন করছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।

ছবি: সংগৃহীত

এর আগে এদিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া ও পাশাপাশি সব হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে শুরু হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত আসে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার কুয়েট ক্যাম্পাসে পৌঁছান। তবে তিনি কথা বলেও তাদের অনশন থেকে সরাতে পারেননি।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। পরে প্রায় ৪০ মিনিট অনশনরত ও অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।

কিভাবে ছয় দফা থেকে উপাচার্য পদত্যাগের এক দফা দাবিতে পরিণত হল, সেই বিষয়টি শিক্ষার্থীরা জানান।

মঙ্গলবার বিকালেও ফোন করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।

আমরণ অনশন কর্মসূচির তৃতীয় দিনে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। তবে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন তারা।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠন করা কমিটির তিন সদস্যের দল বুধবার কুয়েট ক্যাম্পাসে যায়।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

আগের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয় এবং বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দেন।

তাদের দাবি, কিছুদিন আগে বহিরাগত একজন বাদী হয়ে ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কুয়েট কর্তৃপক্ষ ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীও রয়েছে। উপাচার্যের কাছে বারবার দাবি জানালেও তিনি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করেননি।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *