
গাজীপুর প্রতিনিধি।
উত্তরের পথে নজিরবিহীন যানজটে ভুগছে ঘরমুখো মানুষ। উত্তরাঞ্চলের ২৬ জেলার প্রবেশপথ গাজীপুরের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় যানবাহনের জটলা বেড়েই চলছে। কাঙ্ক্ষিত যানবাহন না পেয়ে হাজার হাজার যাত্রী অবস্থান করছেন ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে। অভিযোগ রয়েছে যাত্রীর চাপে হঠাৎ ভাড়া দ্বিগুণ নিচ্ছেন পরিবহণ মালিকরা। তবে ভাড়া নৈরাজ্য রোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
যাত্রীরা বলছেন, আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এ এমন এক পরীক্ষা যেটা না দিয়ে বাড়ি পৌঁছানোর সুযোগ নাই।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রা বাস টার্মিনাল এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উত্তরাঞ্চলমুখী লেনে তীব্র যানজট। যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি পশুবাহী ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনে গন্তব্যের পথে ঘরমুখো মানুষ। নানা ভোগান্তিতেও চোখে উচ্ছ্বাস তাদের। তবে ভাড়া নৈরাজ্যতায় দিশেহারা অনেকেই।
আজহার মিয়া নামে এক পোশাকশ্রমিক বার্তা২৪.কমকে বলেন, বাসে উঠতে কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রইলাম। ভাড়া দ্বিগুণ। এখন পিকআপে উঠার চেষ্টা করছি। পিকআপে তুলনামূলক ভাড়া কম।
একই মন্তব্য পোশাক শ্রমিক আমেনা আক্তারের, মধ্যবয়সী এই নারীর সাধ্যের বাহিরে বাস ভাড়া, যার ফলে জীবন ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে উঠার অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
এদিকে বেলা গড়াতেই মহাসড়কে চাপ বেড়েই চলছে, জেলার চন্দ্রা বাস টার্মিনালের উভয় পাশে অর্থাৎ চন্দ্রা নবীনগর ও চন্দ্রা থেকে ভোগড়া বাইপাস পর্যন্ত সড়কে থেমে থেমে চলছে গাড়ি। ফলে ১০ মিনিটের সড়ক যেতে সময় লাগছে এক ঘণ্টারও বেশি।
এসব ব্যাপারে নাওজোড় হাইওয়ে থানার ওসি সওগা তুল আলম জানান, যাত্রীদের নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে এবার আগেভাগেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চন্দ্রা এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা। যাত্রীদের ছিনতাই, ডাকাতি বা মলম পার্টির হাত থেকে রক্ষা করতে হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে কাজ করছেন।
প্রসঙ্গত, শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরের ৫০ ভাগ কারখানা গতকাল (বুধবার) সকালে ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়। এতে কর্মীরা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে বাড়ির পথে রওনা হয়। এবং বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকে বাকি ৫০ ভাগ কারখানা ছুটি ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। যার ফলে গতকালের তুলনায় আজ যাত্রীর চাপ দ্বিগুণ হয়েছে।