
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, ফেনী।
টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজানের ঢলের পানিতে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় দুই উপজেলায় মোট ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ফুলগাজী উপজেলায় ৩২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরশুরাম উপজেলায় ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবার, রান্না করা খাবার এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
দুর্যোগ পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করতে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখায় ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যে কোনো প্রয়োজনে ০১৮১৮-৪৪৪৫০০ ও ০১৩৩৬-৫৮৬৬৯৩ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ৪০০ করে মোট ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী রান্না করা খাবার সরবরাহের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ১০টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে দুই উপজেলার একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে মানুষের ঘরবাড়ি ও কৃষিজমিতে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো মানুষ। নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন , আমরা এখন পর্যন্ত পাঁচটি স্থানে ভাঙনের তথ্য পেয়েছি। আরও খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানব। মাঠপর্যায়ে আমাদের কাজ অব্যাহত রয়েছে। দুপুরে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। উজানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলোর বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড সতর্ক অবস্থানে রয়েছে
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, জেলায় টানা দুই দিন ধরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। আগামী ২-৩ দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে, তবে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা আপাতত নেই।