ত্রাণ নিতে আসা মানুষের ওপর গুলি, গাজায় নিহত আরও ৭২

Spread the love

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৭২ জন ফিলিস্তিনি—তাদের অনেকেই সহায়তার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন।

এদিকে রোববার (৩০ জুন) ভোর থেকে গাজা শহর ও উত্তরাঞ্চলে চলা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৭ জন। বোমাবর্ষণের সময়টায় গাজা শহরের জেইতুন, সাবরা এবং আল-জাওইয়া বাজার এলাকার পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

আহতদের ঢল নামে উত্তর গাজার আল-আহলি হাসপাতালে। সেখানে আল জাজিরার সাংবাদিক মুয়াত আল-কালহুত জানান, “হাসপাতালটিতে জায়গার অভাবে বহু মানুষ মেঝেতে পড়ে আছে। চিকিৎসাসামগ্রী নেই, বেড নেই, শিশুরাও মারাত্মক আঘাতে জর্জরিত।”

তিনি বলেন, “এখানে প্রচুর আহত মানুষ এসেছেন, যাদের মধ্যে অনেক শিশু। পর্যাপ্ত বেড বা চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই, অনেকেই মেঝেতে পড়ে আছেন। হাসপাতালটি চরম সংকটে রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, ইসরায়েল পূর্ব গাজা শহরে লিফলেট ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে দক্ষিণে সরে যেতে বলছে। কিন্তু এসব সতর্কতার পরই শুরু হচ্ছে ভারী বোমা হামলা, যাতে হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহর উত্তরে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে সহায়তা নিতে গিয়েছিলেন এমন পাঁচজন ফিলিস্তিনি রয়েছেন যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বিতরণ কেন্দ্রগুলো বর্তমানে পরিচালনা করছে ব্যাপক সমালোচিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ), যাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থন দিচ্ছে।

গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, জিএইচএফ গাজায় আংশিক সহায়তা বিতরণ শুরু করার পর (মে মাসের শেষদিক থেকে) ইসরায়েলি সেনারা প্রায়শই এসব কেন্দ্রের আশপাশে অপেক্ষমাণ মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে, এতে এখন পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং চার হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ একটি প্রতিবেদনে জানায়, কিছু ইসরায়েলি সেনা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন— তাদেরকে নিরস্ত্র সহায়তা প্রার্থীদের ওপর গুলি চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গাজায় মানবিক সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। পুষ্টির অভাবে শিশু ও নবজাতকদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া বোমা হামলার কারণে ধুলা ও বিষাক্ত গ্যাসে শিশুদের মধ্যে শ্বাসজনিত রোগও বাড়ছে বলেও জানান তিনি।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *