
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় চালানো সাম্প্রতিক বিমান হামলা তাদের নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণ করেছে। তবে এখনো ওই স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে কি-না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় তারা।
হামলার ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন—ব্যাটল ড্যামেজ অ্যাসেসমেন্ট (বিডিএ)—চলমান রয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা হুমকি হ্রাস সংস্থা (ডিটিআরএ) এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এই হামলার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে।
এক কর্মকর্তা জানান, ‘আমরা প্রাথমিক মূল্যায়ন পেয়েছি। পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আসবে। যেমনটি চেয়ারম্যান (চিফ অব জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ, এয়ার ফোর্স জেনারেল ড্যান কেইন) তার দুই সপ্তাহ আগের সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, আমরা আমাদের নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করেছি।’
হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো কি নির্ধারিত গভীরতায় পৌঁছাতে পেরেছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি এখনো পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।’
আরেক প্রশ্নে, মাটির গভীরে বিস্ফোরণের লক্ষ্য কতটা পূরণ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি এমন একটি তথ্য, যার বিস্তারিত এখনো আমাদের কাছে নেই।’
এর আগে, গত ২২ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল কেইন বলেছিলেন, ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ অভিযানে ওই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ‘চরম মাত্রার ক্ষতি ও ধ্বংস’ হয়েছে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ‘সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস’ করে দেওয়া হয়েছে।
তবে এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে যখন ডিটিআরএ কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করা হয়, আসলেই কী ধ্বংস হয়েছে, তখন তারা স্পষ্ট করে কিছু না জানিয়ে বলেন, ‘চেয়ারম্যান যা বলেছেন, সেটাই আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে সফলতা। আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের যথাযথ তথ্য দিয়েছি, এবং সেই অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট অনুমোদিত হামলা চালানো হয়েছে, যার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত ‘প্রভাব’ তৈরি হয়েছে।’
‘প্রভাব’ বলতে কী বোঝানো হচ্ছে, জানতে চাইলে কর্মকর্তারা আবারও পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়নের অপেক্ষার কথা বলেন।
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘ঠিক কী প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে?’ উত্তরে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘চেয়ারম্যান কেইন আগেই যা বলেছেন, আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে পেরেছি।’
আবারও প্রশ্ন আসে, ‘তাহলে লক্ষ্য কী ছিল?’ উত্তরে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তথ্য দিয়েছি যাতে তারা যেখানে চেয়েছে সেখানে আঘাত করতে পারে—এই ছিল আমাদের ভূমিকা।’
আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘লক্ষ্য বিষয়ে বিস্তারিত জানানো আমাদের এখতিয়ারের বাইরে।’
এর আগে, পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘এক থেকে দুই বছর পিছিয়ে গেছে।’ তিনি আরও দাবি করেন, ‘এই তিনটি স্থাপনাই সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি