
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর। ইম্ফলে রাজ্য সরকারি বাস থেকে ‘মণিপুর’ সাইনবোর্ড অপসারণের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মানুষ মশাল মিছিলে অংশ নেয়। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় সম্প্রতি মণিপুরের উখরুলে আয়োজিত শিরুই লিলি (এক বিরল প্রজাতির ফুল) উৎসবকে ঘিরে। এই অনুষ্ঠানের জন্য একটি বাসে করে সাংবাদিকদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেখানে। কিন্তু গোয়ালতাবির চেক পোস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে বাসের গায়ে লেখা ‘মণিপুর রাজ্য পরিবহন’ থেকে ‘মণিপুর’ শব্দটি ঢেকে দিতে বলা হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ কমিটি তৈরি করে তদন্তের কথা ঘোষণা করা হলেও তা ক্ষোভ প্রশমন করতে পারেনি।
গত সপ্তাহ থেকে মিছিল, আন্দোলন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের ঢুকতে না দেওয়া এবং বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘাতকে কেন্দ্র করে বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুরের বিভিন্ন অঞ্চল।
বিষ্ণুপুর এবং থোবাল জেলা, খুরাই, কোংবা-সহ একাধিক এলাকায় বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে। রাজভবনের উদ্দেশে রওনা হওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসের সেল ব্যবহার করে।
বিক্ষোভের জেরে চলতি সপ্তাহে পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে, দিল্লি থেকে ফেরার সময় রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লাকে বিমানবন্দর থেকে রাজভবন যাওয়ার জন্য সামরিক হেলিকপ্টারে করে যাতায়াত করতে হয়।
অথচ মাত্র ছয়-সাত কিলোমিটার পথ সাধারণত সড়কপথেই সফর করেন রাজ্যপাল। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এন বীরেন সিং মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন চলছে এবং এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লা।
জাতিগত সংঘর্ষের জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা মণিপুরে দুই বছর পর শিরুই লিলি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল উখরুলে। এই সময় এই বিরল প্রজাতির ফুল ফোটে। পর্যটকদের উৎসাহ দিতে কয়েক বছর আগে এই মৌসুমে শিরুই লিলি উৎসব শুরু করে ওই রাজ্যের পর্যটন বিভাগ। কিন্তু মণিপুরের পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর ওই অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। এখন এই রাজ্যের রাজনৈতির কথা মাথায় রেখে, বিষয়টি কোনদিকে গড়ায় সেটাই দেখার।
সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস