
বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ায় ৮৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ তিন পুলিশ ও এক আনসার সদস্য ধরা পড়েছেন। ডিবি পুলিশ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মাদক আইনে মামলা করেছে। শুক্রবার বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার রাতে পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা জানান, ব্যক্তির দায় বাহিনী নেবে না। বগুড়ার একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্য তিন জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- বগুড়া পুলিশ লাইন্সে কর্মরত নায়েক আবদুল আলিম (৩৩), জয়পুরহাট সদর ট্রাফিকের কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন (৩৭), রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) কনস্টেবল আবদুল ওয়াহাব (৪০) ও শফিপুর আনসার একাডেমির ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য আবু সুফিয়ান (৪২)। আবদুল আলিমের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ও অপর তিন জনের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা ও সারিয়াকান্দিতে।
বগুড়া ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর রাকিব হোসেন ও অন্য কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গোপনে জানতে পারেন শহরের সাতমাথায় একাত্তর আবাসিক হোটেলের সামনে তিন জন ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছেন। সেখানে পৌঁছার পর সন্দেহভাজন তিন জন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আটকের পর আনসার সদস্য আবু সুফিয়ানের ব্যাগ তল্লাশি করলে ৭০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে আবু সুফিয়ান জানান, কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন ও আবদুল ওয়াহাব ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করে বিকাশে টাকা নেন। কনস্টেবল সাখাওয়াতের বিকাশ নম্বর পরীক্ষা করে ২৭ হাজার টাকা লেনদেনের সত্যতা মেলে। ওই টাকা জব্দ করা হয়।
তারা আরও জানান, বগুড়া পুলিশ লাইন্সে কর্মরত নায়েক আবদুল আলিম কিছুক্ষণ আগে তাদের কাছে ১৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট কিনে নিয়ে গেছেন। পরে তাকে (আলিম) শহরের নবাববাড়ি সড়কে পুলিশ প্লাজার সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার হাত ব্যাগ তল্লাশি করে ১৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়।
কর্মকর্তারা আরও জানান, গ্রেপ্তার চার জনের মধ্যে নায়েক আবদুল আলিমকে বগুড়া
পুলিশ লাইন্স কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর ও অপর তিন জনকে ডিবি পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের এসআই আবদুল কুদ্দুস সদর থানায় চার জনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা করেন। আগে কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন বঙ্গভবনে ও নায়েক আবদুল আলিম ও কনস্টেবল আবদুল ওয়াহাব ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়া আনসার সদস্য আবু সুফিয়ান গত সরকারের সময় সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর বাসভবনে ডিউটি করতেন। তারা একে অপরের পূর্ব পরিচিত এবং ঢাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড জড়িত ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারা বিভিন্ন জেলায় বদলি হন। এরপরও মাদক ব্যবসার স্বার্থে তাদের মধ্যে সম্পর্ক অটুট ছিল।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা জানান, মামলার পর গ্রেপ্তার চার জনকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে নায়েক আবদুল আলিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অপর তিন জনের বিরুদ্ধে নিজ নিজ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাদেরও সাময়িক বরখাস্ত করা হবে।