
নড়াইল, করেসপন্ডেন্ট।
নড়াইলে আন্তঃজেলা ডাকাতদলের মূলহোতা তুষার শেখ ওরফে গোল্ড হৃদয় (৩৫) এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া বেগম ওরফে জান্নাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশ। রোববার (৬ জুলাই) রাতে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, রোববার ভোরে র্যাব-৪ ও লোহাগড়া থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ঢাকার বিমানবন্দরের আজমপুর এলাকা থেকে তুষারকে গ্রেপ্তার করে। পরে তুষারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লোহাগড়ার নোয়াগ্রাম থেকে স্বর্ণালংকারসহ তার স্ত্রী রোকেয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তুষার শেখ লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামের ওয়াদুদ শেখের ছেলে। রোকেয়া বেগমের বাড়ি খাগড়াছড়ির ইসলামপুরে।
সংবাদ সম্মেলনে ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি লোহাগড়া উপজেলার ঘাঘা গ্রামে প্রবাসী বাবলু শেখের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেখানে প্রবাসীর স্ত্রী শেফালী বেগমকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন লুট করা হয়। এ ঘটনায় শেফালী বেগম লোহাগড়া থানায় মামলা করেন। এর চার দিন পর একই উপজেলার নোয়াগ্রামে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবুল হাসান বিশ্বাসের বাড়িতে দ্বিতীয় দফায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেখানেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন লুট করে ডাকাত দল।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, তুষার শেখের নেতৃত্বে আন্তঃজেলা ডাকাত দল ওই ডাকাতিগুলো সংঘটিত করে। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তুষারের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তুষারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাড়ি থেকে লুন্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।
তুষার শেখ গণমাধ্যমকে জানায়, প্রথমে সে চুরি করত। পরে আসমা বেগম নামের এক নারী তাকে বিভিন্ন বাড়ির তথ্য দেয়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে সে সহযোগীদের নিয়ে ডাকাতির পরিকল্পনা করে।
ভুক্তভোগী শেফালী বেগম জানান, আসমা বেগম তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করত এবং সেই ডাকাতদের খবর দিয়ে তার সর্বনাশ করেছে।
ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, তুষারের বিরুদ্ধে ডজনখানেক মামলা রয়েছে। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সে বিলাসী জীবন যাপনে অভ্যস্ত। লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে এবং ডাকাত দলের বাকি সদস্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।