
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।
বিশ্ববাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশের পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে, তার সর্বনিম্ন হার হবে ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ, শুল্ক হার ১৫ শতাংশের নিচে নামবে না বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার ওয়াশিংটনে এক এআই সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের একটি সরল, সহজ শুল্ক থাকবে যা ১৫ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছু দেশের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ হবে। কারণ, আমরা তাদের সঙ্গে খুব একটা বনিবনা করে চলতে পারিনি।’
ট্রাম্পের এই মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি বাণিজ্য অংশীদারের ওপর শুল্ক আরোপের তাঁর প্রচেষ্টার সর্বশেষ মোড়। এটি সর্বশেষ ইঙ্গিত যে ট্রাম্প ছোট একটি গ্রুপ ছাড়া বাকি দেশগুলো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর আরও আগ্রাসী শুল্ক আরোপের কথা ভাবছেন। চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প বলেছিলেন, ১৫০ টিরও বেশি দেশকে একটি চিঠি পাঠানো হবে যেখানে শুল্কের হার হবে ‘সম্ভবত ১০ বা ১৫ শতাংশ—আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’
মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক গত রোববার সিবিএস নিউজকে বলেন, ‘লাতিন আমেরিকার দেশগুলো, ক্যারিবীয় দেশগুলো, আফ্রিকার অনেক দেশসহ’ ছোট দেশগুলোর জন্য প্রাথমিক শুল্ক ১০ শতাংশ হবে। তবে গত এপ্রিলে শুল্কের প্রথম ঘোষণায়, ট্রাম্প প্রায় প্রতিটি দেশের ওপর ১০ শতাংশ সর্বজনীন শুল্কের কথা জানিয়েছিলেন।
যদিও ট্রাম্প এবং তাঁর উপদেষ্টারা প্রাথমিকভাবে একাধিক চুক্তি নিশ্চিত করার আশা প্রকাশ করেছিলেন। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন শুল্কের চিঠিগুলোকেই ‘চুক্তি’ হিসেবে প্রচার করছেন এবং ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে, তিনি আলোচনার বিষয়ে আগ্রহী নন। তবুও, তিনি দেশগুলোর জন্য এমন চুক্তি করার দরজা খোলা রেখেছেন যা এই হার কমাতে পারে।
মঙ্গলবার, ট্রাম্প ঘোষণা করেন—তিনি জাপানের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করবেন। এর বিনিময়ে জাপান কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে এবং ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্রে। দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যসহ অন্যান্য দেশগুলো বর্ধিত শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে একটি চুক্তির জন্য এখনো চাপ দিচ্ছে।
বুধবার ট্রাম্প বলেন, ‘কিছু দেশের জন্য খুব, খুব সাধারণ শুল্ক থাকবে’ কারণ এত বেশি দেশ আছে যে ‘সবার সঙ্গে চুক্তি করা সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ছিল। ট্রাম্প বলেন, ‘যদি তারা আমেরিকান ব্যবসার জন্য ইউনিয়নের দরজা খুলতে সম্মত হয়, তবে আমরা তাদের কম শুল্ক দিতে দেব।’
সূত্র: ইকোনোমিক টাইমস